পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন, পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলোর নিজস্ব প্রতীকে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত; অনীত থাপার দলকে সমর্থন তৃণমূলের

কয়েক মাস পরেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলি এবার নিজেদের প্রতীকে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতদিন তারা তৃণমূল কংগ্রেস বা বিজেপিকে সমর্থন করত অথবা এই দুই দলের প্রতীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত, কিন্তু এবার সেই পরিস্থিতিতে বদল চাইছে তারা।
অনীত থাপার দলকে সমর্থন তৃণমূলের
আঞ্চলিক দলগুলির নিজস্ব প্রতীকে লড়ার সিদ্ধান্তের পর তৃণমূল কংগ্রেস কৌশলগতভাবে অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চাকে (BGPM) সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপির শরিক দলগুলোর রাজনৈতিক স্বীকৃতি বাতিল হওয়ায় তারা বিপাকে পড়েছে। জিএনএলএফ বা বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মতো দাপুটে দলগুলির রেজিস্ট্রেশন নির্বাচন কমিশন বাতিল করায়, তাদের বিজেপির প্রতীকেই লড়তে হবে।
অনীত থাপা শিবির পাহাড়ের তিনটি আসনে নিজেদের প্রতীকে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য গৌতম দেব বলেন, “পাহাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীককে পাহাড়বাসী সেভাবে পছন্দ করে না। যে কারণে প্রতিবার আমরা পরাজিত হয়েছি। তাই এবার তারা (অনীত থাপারা) নিজেদের মতো করে লড়বে। আমরা সমর্থন করব।”
অস্তিত্ব সংকটে জিএনএলএফ ও গুরুং মোর্চা
পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলি নিজস্ব প্রতীকে লড়তে চাইছে কারণ:
তৃণমূল প্রতীকের প্রতি অনীহা: পাহাড়ে রাজ্যের শাসকদলের ছবিটা খুব একটা ভালো নয়।
রেজিস্ট্রেশন বাতিল: দীর্ঘদিন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না-করায় জিএনএলএফ (GNLF) এবং বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মতো দলগুলোর রাজনৈতিক স্বীকৃতি বাতিল হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে দলগুলি অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। সেই কারণেই এবার অনীত-শিবির পাহাড়ের তিনটি আসনেই নিজস্ব প্রতীকে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিজেপির শরিকদের মধ্যে আসন নিয়ে টানাপোড়েন
বিজেপির এনডিএ জোট শরিক জিএনএলএফ, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, সিপিআরএম-সহ অন্যান্য দলগুলো বরাবর বিজেপির প্রতীকেই লড়াই করে এসেছে। এবারও তাদের বিজেপির প্রতীকেই লড়তে হবে, যা পদ্ম-শিবিরের জন্য মাথাব্যথা বাড়িয়েছে।
জিএনএলএফ: দার্জিলিং ও কার্শিয়াং আসনে প্রার্থী দিতে চাইছে।
বিমল গুরুংয়ের মোর্চা: কালিম্পং ও দার্জিলিং বিধানসভা আসনে প্রার্থী দিতে চাইছে।
জিএনএলএফের সম্পাদক নীরজ জিম্বা বলেন, “আমাদের অর্থাৎ আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোকে টিকে থাকতে হলে নির্বাচনে লড়াই করতে হবে। আমরা বিজেপির সঙ্গে জোটে রয়েছি। বাকিটা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “প্রতি নির্বাচনে আমরা বিজেপিকে সমর্থন জানিয়ে এসেছি। এবার বিজেপি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন করুক।” বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা জানিয়েছেন, “এখনও এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা প্রত্যেক আঞ্চলিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব।”