পুরুলিয়ার লালপাহাড়িতে কমলা বিপ্লব! রুক্ষ মাটিতেই ফলছে উত্তরবঙ্গের স্বাদের লেবু, অবাক বিশেষজ্ঞ মহল

ছোট কোয়ায় ভরা, টক-মিষ্টি স্বাদের কমলালেবু বললেই আমাদের চোখে ভাসে শীতল পাহাড়ি এলাকার দৃশ্য। কিন্তু এই চলতি শীতে সেই পরিচিত ধারণাকেই চ্যালেঞ্জ জানাল পুরুলিয়ার রুক্ষ লাল মাটি। যেখানে পর্যাপ্ত জলের অভাবে অন্য চাষ প্রায় হয়ই না, সেই বাঘমুণ্ডির বুরদা গ্রামের অনুর্বর জমিতেই এখন গাছ নুয়ে পড়েছে কমলার ভারে। স্বাদে ও গন্ধে এই কমলা উত্তরবঙ্গের লেবুর থেকে বিন্দুমাত্র আলাদা নয়।
পাহাড় বা তরাই অঞ্চল নয়, লালমাটির দেশের বাঘমুণ্ডির বুরদা গ্রামের বাসিন্দা লালিমা মাহাতো-র জমিতেই বেড়ে উঠেছে এই কমলালেবুর গাছ। তাঁর ৪টি পূর্ণবয়স্ক গাছে এমন ফলন হয়েছে যে, গাছগুলি অনেকটাই ঝুঁকে গেছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সহায়তায় লালিমাদেবী এই কমলা বাজারে বিক্রিও করেন।
এই ব্যতিক্রমী চাষের শুরুটা ছিল নিতান্তই অপ্রত্যাশিত। লালিমা মাহাতো জানান, একসময় তিনি অন্যান্যদের মতোই কমলা খেয়ে বীজ ফেলে দিতেন। কিন্তু বছর কয়েক আগে একদিন লেবু খাওয়ার পর বীজগুলি ফেলে না দিয়ে তিনি কৌতূহলবশত বাড়ির পাশের জমিতে ছড়িয়ে দেন।
এই রুক্ষ মাটিতে লেবু হবে না ভেবে একসময় সেকথা ভুলেও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন পর ওই বীজ থেকেই ছোট ছোট চারা গজাতে দেখে তিনি বিস্মিত হন। এরপর সযত্নে জৈব সার দিয়ে তিনি চারাগুলিকে বড় করে তোলেন।
পুরুলিয়ার বুরদা গ্রামের এই ঘটনা প্রমাণ করে দিল যে, সঠিক যত্ন পেলে এবং সামান্য উদ্ভাবনী পদক্ষেপ নিলেই রুক্ষ মাটিতেও পাহাড়ি ফলের চাষ করা সম্ভব। স্থানীয় মানুষজন থেকে পর্যটক অবধি সকলেই এখন লাল মাটিতে উৎপন্ন এই মিষ্টি কমলার স্বাদ নিচ্ছেন।