জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাস দমন অভিযান! CIK-এর ১২টি স্থানে একযোগে তল্লাশি, অনলাইনে জঙ্গি নিয়োগ চক্রের খোঁজে বড় পদক্ষেপ

জম্মু ও কাশ্মীর: জঙ্গি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযানে নেমেছে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স কাশ্মীর (CIK)। কাশ্মীর উপত্যকার সাতটি জেলায় মোট ১২টি নির্দিষ্ট স্থানে একযোগে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে।
মীর ফারিদ জানিয়েছেন, এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হল এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা, যাঁরা অনলাইনে সন্ত্রাসবাদের মহিমাকীর্তন এবং নতুন জঙ্গি ক্যাডার নিয়োগের মতো উগ্রপন্থী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের সহযোগিতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। তল্লাশির সময় এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয় এবং পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখা হয়।
রেড ফোর্ট বিস্ফোরণ মামলার পর গুরুত্ব বাড়ল
এই CIK অভিযানটির গুরুত্ব আরও বেড়েছে কারণ এটি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রেড ফোর্ট বিস্ফোরণ মামলার পরপরই শুরু হয়েছে। ওই ঘটনার পরই গোয়েন্দা সংস্থাগুলি কাশ্মীর জুড়ে সক্রিয় বিভিন্ন সন্ত্রাসী মডিউল ও তাদের সহযোগী নেটওয়ার্ক খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। তদন্তকারীদের আশঙ্কা, রেড ফোর্ট বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত চক্রের শিকড় উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকতে পারে।
CIK সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে, তাঁদের অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে উগ্রপন্থী প্রচার, সন্ত্রাসবাদকে গ্লোরিফাই করা এবং যুবকদের ভুল পথে পরিচালিত করার কাজে যুক্ত বলে সন্দেহ।
ডিজিটাল ডিভাইস ও আপত্তিকর সামগ্রী উদ্ধার
তল্লাশি অভিযানে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু আপত্তিকর ও সন্দেহজনক সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল ডিভাইস, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, সিম কার্ড, নথিপত্র এবং অনলাইন কার্যকলাপ সংক্রান্ত তথ্য। তদন্তকারীদের ধারণা, এইসব উপাদান বিশ্লেষণ করলে জঙ্গি নিয়োগের পদ্ধতি, আর্থিক লেনদেন এবং যোগাযোগের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসতে পারে।
CIK এবং স্থানীয় পুলিশের যৌথ দল এই মুহূর্তে উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর ডিজিটাল ফরেনসিক বিশ্লেষণ চালাচ্ছে। যাঁদের উপর তল্লাশি চালানো হয়েছে, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদও চলছে। নিরাপত্তা সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে, এই তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনে আরও গ্রেপ্তার হতে পারে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি সরাসরি যোগাযোগের বদলে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, এনক্রিপটেড মেসেজিং অ্যাপ এবং ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার ও নিয়োগ চালাচ্ছে। ফলে এই ধরনের অভিযান এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসন সাধারণ নাগরিকদের আতঙ্কিত না হয়ে, নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে।