‘উন্নয়নের পাঁচালি’ নিয়ে ময়দানে তৃণমূল! বুথে বুথে বাজবে ইমনের গান, দেড় দশকের কাজের খতিয়ান নিয়ে জনসংযোগে শাসক দল!

আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনগণের কাছে পৌঁছতে নতুন কর্মসূচি নিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে যাবে তৃণমূল নেতৃত্ব। বুথ ভিত্তিক জনসংযোগ বাড়াতে বিধানসভা ভিত্তিক দলও গঠিত হচ্ছে। এই দলের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতারা অঞ্চল ধরে ধরে ঘুরবেন এবং রাজ্যের সাড়ে ১৪ বছরে জোড়াফুল সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান মানুষের সামনে তুলে ধরবেন।
এই প্রচারকালে একটি ছোট গাড়িতে বাজবে গায়িকা ইমনের কণ্ঠে গাওয়া উন্নয়নের পাঁচালির গান। মাসব্যাপী এই প্রচার চলবে এলাকায় এলাকায়। কর্মসূচিতে আরও থাকছে—দুপুরে স্থানীয় মানুষের বাড়িতে আহার এবং সন্ধ্যায় স্থানীয় সংস্কৃতির অনুষ্ঠান ও জনসংযোগ সভা।
উন্নয়নের খতিয়ানই প্রধান হাতিয়ার
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের ঘোষণা তৃণমূলের বিপুল জয়ের অন্যতম ‘গেমচেঞ্জার’ ছিল। এরপর লোকসভা ভোটের আগেও ভাতার অঙ্ক বাড়িয়ে প্রকল্পটির গুরুত্ব প্রমাণিত হয়েছে। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিন দফায় সাড়ে ১৪ বছরের উন্নয়নমূলক কাজের পরিসংখ্যান জনসমক্ষে পেশ করছে দল।
ভোটের প্রচারে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান হাতিয়ার এখন ২০১১ সালের মে থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত প্রকল্পের অগ্রগতি। এই পরিসংখ্যান দিয়ে তৈরি প্রচারপুস্তিকা নিয়েই দলের নেতা-কর্মীরা এবার ‘দ্বারে দ্বারে’ ঘুরবেন। পুস্তিকার প্রথম পাতায় বড় বড় করে লেখা—’উন্নয়নের নজির’। এখানে বিভিন্ন দফতর ধরে ধরে তিন বছরে জেলায় যা যা উন্নয়ন হয়েছে, তার বিস্তারিত খতিয়ান পেশ করা হয়েছে।
বিরোধী বনাম তৃণমূলের অস্ত্র
যেখানে বিরোধীরা নারী নির্যাতন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং দুর্নীতি কাণ্ডের মতো বিষয়গুলিকে প্রচারে তুলে ধরছেন, সেখানে তৃণমূলের মূল অস্ত্র হলো উন্নয়ন। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, মানুষ এখন কেবল ‘বড় বড় কথা আর প্রতিশ্রুতিতে’ বিশ্বাস করেন না, তাঁরা নিজেদের এলাকার উন্নয়ন চোখে দেখতে চান। মুখ্যমন্ত্রী সেই কাজটিই করেছেন, আর তৃণমূল সেই বাস্তব উন্নয়নকেই মানুষের সামনে তুলে ধরছে।
অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলির দাবি, তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের তালিকা বাস্তবে যতটা কার্যকর, তার চেয়ে বেশি কেবল ‘কথায় ও পরিকল্পনায়’ সীমাবদ্ধ। তবে তৃণমূল তাদের এই মাসব্যাপী জনসংযোগ কর্মসূচির মাধ্যমে ভোটের আগে জনগণের মন জয় করতে চাইছে।