ইতিহাস গড়ল রেল! মিজোরামের দুর্গম সাইরাং স্টেশনে পৌঁছল ১১৯টি মারুতি গাড়ি, টানেল পেরিয়ে যুগান্তকারী সাফল্য!

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (N.F. Railway) মিজোরামের সাইরাং রেলওয়ে স্টেশনে প্রথমবারের মতো সরাসরি অভ্যন্তরীণ অটোমোবাইল রেক (Direct Internal Automobile Rake) সফলভাবে পরিবহণ করে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছে। গুয়াহাটির কাছে চাংসারি থেকে আসা মোট ১১৯টি মারুতি গাড়ি রেলপথে মিজোরামের সাইরাং পর্যন্ত পরিবহণ করা হয়েছে। রাজ্যের সঙ্গে সংযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার ক্ষেত্রে এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের এই যুগান্তকারী উদ্যোগ মিজোরামে পণ্য সামগ্রী ও যানবাহন পরিবহণকে সহজ করবে। এর ফলে দীর্ঘ দূরত্বের রাস্তার ওপর রাজ্যের নির্ভরতা কমবে এবং অটোমোবাইল ডিলার, পরিষেবা প্রদানকারী ও উপভোক্তারা সরাসরি সুবিধা পাবেন, যা আঞ্চলিক অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
চ্যালেঞ্জিং লাইনে কৌশলগত সাফল্য
অটোমোবাইলের এই সফল চলাচল ৫১.৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ভৈরবি-সাইরাং নতুন রেললাইনের কৌশলগত গুরুত্বকে সামনে এনেছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের আওতাধীন দুর্গম পাহাড়ি ভূখণ্ড এবং ৪৫টি টানেলের মধ্য দিয়ে এই লাইনটি নির্মাণ করা এক চ্যালেঞ্জিং কৌশলগত কৃতিত্ব।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে এই লাইনটির উদ্বোধন করেন। এর ফলে মিজোরাম সম্পূর্ণরূপে ন্যাশনাল রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। এই লাইনে রাজধানী এক্সপ্রেস, মিজোরাম এক্সপ্রেস ও সাইরাং-কলকাতা এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলিতে যাত্রীসংখ্যা অত্যন্ত বেশি, যা রেল সংযোগের ওপর জনগণের আস্থা প্রতিফলিত করে।
মালবাহী ও পার্সেল পরিবহণে দ্রুত সম্প্রসারণ
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ভৈরবি-সাইরাং সেকশনে মালবাহী ও পার্সেল পরিবহণ কার্যক্রমও দ্রুত সম্প্রসারণ করেছে। সিমেন্ট, নির্মাণ সামগ্রী, অটোমোবাইল, বালি, স্টোন চিপস ইত্যাদির মতো অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সামগ্রী এই পথে পরিবহণ করা হচ্ছে। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রথম মালবাহী পরিবহণে অসম থেকে আইজল পর্যন্ত ২১টি সিমেন্টের ওয়াগন পরিবহণ করা হয়েছিল।
এছাড়াও, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে দিল্লিতে অ্যান্থুরিয়াম ফুল পরিবহণ-সহ প্রথম পার্সেল পরিষেবা স্থানীয় উৎপাদকদের জন্য নতুন বাজারের সুযোগ খুলে দিয়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ১৭টি রেক পরিবহণের মাধ্যমে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে মিজোরামকে একটি নির্ভরযোগ্য লজিস্টিকস এবং মোবিলিটি হাবে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।