গঙ্গাসাগর মেলার আগেই সেতুর শিলান্যাস, পুণ্যার্থীদের জন্য মিলবে এইসব পরিষেবা

আগামী জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সাগরদ্বীপে অনুষ্ঠিত হতে চলা ঐতিহ্যবাহী গঙ্গাসাগর মেলা ২০২৬-এর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল জোরকদমে। সোমবার নবান্নে রাজ্যের শীর্ষ আধিকারিক এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলির সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর এই সমাগম উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তার উপর বিশেষ জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
“ভিআইপি-র জন্য যেন আমজনতার সমস্যা না হয়” নবান্নের প্রস্তুতি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিআইপি সংস্কৃতি নিয়ে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে দেন। তাঁর কড়া নির্দেশ, গঙ্গাসাগর মেলায় কোনো ভিআইপি-র কারণে যেন সাধারণ পুণ্যার্থীদের কোনো সমস্যা না হয়। ভিড়ের সুযোগ নিয়ে কোনোভাবেই যেন ‘ভিআইপি সংস্কৃতি’ প্রশ্রয় না পায়।
সম্প্রতি যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে একটি অনুষ্ঠানে ভিভিআইপিদের ভিড়ের কারণে আমজনতার মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চান, এবার গঙ্গাসাগর মেলার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীরা যেন ভিআইপি সংস্কৃতি থেকে দূরে থেকে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় পুরোপুরি মন দেন। আগামী ১২ জানুয়ারি থেকেই মন্ত্রীরা মেলা প্রাঙ্গণে পৌঁছে যাবেন পরিস্থিতি পরিদর্শনে।
মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী-সহ পূর্ত, পরিবহন, জনস্বাস্থ্য, সুন্দরবন উন্নয়ন, দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ভিড় নিয়ন্ত্রণে একাধিক ব্যবস্থা:
-
স্বেচ্ছাসেবক: প্রায় সাড়ে তিন হাজার ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মেলায় কাজে লাগানো হবে।
-
নিরাপত্তা: ড্রোন ও সিসিটিভির মাধ্যমে মেলা প্রাঙ্গণে সার্বক্ষণিক নজরদারি চালানো হবে।
-
পরিচয় ব্যবস্থা: পুণ্যার্থীদের হাতে রিস্ট ব্যান্ড ও আইডি কার্ড দেওয়া হবে।
-
বীমার সুবিধা: সব পুণ্যার্থীর জন্য থাকবে ইনস্যুরেন্সের ব্যবস্থা।
যোগাযোগ ও পরিকাঠামো: পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের জন্য ২৫০০টি বাস চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে ২৫০টি লঞ্চ এবং ২১টি জেটির ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। যাতায়াত সুগম করতে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
গঙ্গাসাগর সেতুর শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী: মেলা পরিদর্শনের দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুড়িগঙ্গা নদীর উপর নির্মিত হতে চলা প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ গঙ্গাসাগর সেতুর শিলান্যাস করবেন। প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এই সেতুটি কাকদ্বীপ থেকে সাগরদ্বীপকে সরাসরি যুক্ত করবে। এর ফলে ভবিষ্যতে ফেরি বা পন্টুন ব্রিজের উপর নির্ভরতা কমবে এবং সরাসরি গাড়ি নিয়ে গঙ্গাসাগরে যাওয়া সম্ভব হবে।