পরিবারে চরম সঙ্কট, ৪৩ বছর বয়সী বাবা ও তিন নাবালিকা মেয়ের মৃত্যু; দুই ছেলেকে নিয়ে রাতের অন্ধকারে বাবার চরম পদক্ষেপ

চরম আর্থিক অনটনের জেরে পাঁচ সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে আত্মহননের মতো চরম পদক্ষেপ নিলেন বিহারের মুজাফ্ফরপুরের এক ৪৩ বছর বয়সী ব্যক্তি। এই মর্মান্তিক ঘটনায় বাবা ও তাঁর তিন নাবালিকা মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তবে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছে তাঁর দুই ছেলে। ঘটনাটি ঘিরে মুজাফ্ফরপুর জেলার সাকরা থানা এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
ঘটনার বিবরণ: পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর বাবার দুই নাবালক ছেলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে এসে চিৎকার শুরু করে। তাদের চিৎকারে গ্রামবাসীরা জড়ো হন এবং সাকরা থানায় খবর দেওয়া হয়।
পরে সাকরা থানার পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে মৃত চারজনের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান এবং ফরেন্সিক দলকেও নমুনা সংগ্রহের জন্য ডেকে পাঠানো হয়।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মৃত ব্যক্তির নাম অমরনাথ রাম (৪৩)। মৃত তিন মেয়ে হল রাধা কুমারী (১১), রাধিকা (৯) এবং শিবানী (৭)। তবে তাঁর দুই ছেলে শিবম কুমার (৬) এবং চন্দন (৪) প্রাণে বেঁচে যায়।
আর্থিক অনটন মূল কারণ: প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, পরিবারটি গুরুতর আর্থিক সঙ্কটে ভুগছিল। এমনকি, মৃত অমরনাথ রামের কোনও নির্দিষ্ট চাকরিও ছিল না।
সাকরা থানার পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “মূলত চরম আর্থিক অনটন থেকেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ঘটনার সঙ্গে অন্য কোনও কারণ জড়িয়ে রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
স্থানীয়রা জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ওই ব্যক্তির স্ত্রী মারা যান। এরপর থেকে পাঁচ সন্তানের লালন-পালনের যাবতীয় দায়িত্ব বাবার কাঁধে এসে বর্তায়। স্থানীয় বাসিন্দা রমাশিস বলেন, “জানুয়ারি মাসে স্ত্রী’র মৃত্যু হয়। এরপর থেকে চরম আর্থিক সঙ্কটে ভুগছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে পাঁচ সন্তানের দায়িত্ব। সবমিলিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে চিন্তিত ছিলেন তিনি।”
মৃতের কাকা জানিয়েছেন, “এদিন ভোর ৪টের সময় ঘুম থেকে উঠে দেখি বাচ্চা দু’টি কাঁদছে। কী হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই, শিশু দু’টি জানায় তিন মেয়েকে নিয়ে নিজের প্রাণ নিয়েছেন তাদের বাবা।” এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।