জর্ডানে প্রধানমন্ত্রী মোদী, ৭৫ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কে এবার কি বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি? অস্ত্র কেনা-বেচার সম্ভাবনা তুঙ্গে!

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সকালে জর্ডানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। তাঁর এই সফর ১৫ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে, যার মধ্যে তিনি ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর জর্ডানে অবস্থান করবেন। ভারত ও জর্ডানের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্তির ঐতিহাসিক মুহূর্তে তাঁর এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং কৌশলগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রত্যাশা কেন? সাধারণত, যখন কোনও রাষ্ট্রপ্রধান বিদেশ সফরে যান, তখন বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষা চুক্তিগুলিই প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়। ভারত বা জর্ডান কেউই একে অপরের কাছে হুমকি নয় এবং জর্ডান কোনও স্বার্থের সংঘাতের সম্মুখীনও নয়। তা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবারের সফরে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির পাশাপাশি একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব।
জর্ডান মধ্যপ্রাচ্যের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অবস্থানে অবস্থিত এবং বিশ্ব রাজনীতিতে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। জর্ডান খ্রিস্টান, ইহুদি এবং মুসলমানদের ধর্মীয় কেন্দ্র হলেও, এর চারপাশের ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল।
জর্ডানের জটিল ভৌগোলিক অবস্থান: জর্ডানের উত্তরে লেবানন ও সিরিয়া; উত্তর-পূর্বে ইজরায়েল; উত্তর-পশ্চিমে ইরাক; দক্ষিণ-পূর্বে মিশর এবং পশ্চিমে সৌদি আরব অবস্থিত। সৌদি আরব ছাড়া অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে তার সম্পর্ক স্থিতিশীল নয়। ফলে, আত্মরক্ষার জন্য জর্ডানের আধুনিক অস্ত্র অপরিহার্য হয়ে ওঠে।
ধর্মীয় ও রাজতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা: মধ্যপ্রাচ্যে একটি ছোট স্ফুলিঙ্গও যুদ্ধের সূত্রপাত করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, নিজেদের রাজতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সামরিক শক্তি বৃদ্ধি জর্ডানের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
কৌশলগত ও কূটনৈতিক সম্পর্ক: ভারত ও জর্ডানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দুই দেশের নেতৃত্বের মধ্যে নিয়মিত সংলাপ বিদ্যমান এবং ভারত জর্ডানকে মধ্যপ্রাচ্যে একটি স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য অংশীদার বলে মনে করে। বিশেষত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে উভয় দেশেরই অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে এবং তারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে একে অপরকে ধারাবাহিকভাবে সমর্থন করে আসছে।
ইতিমধ্যেই সামরিক প্রশিক্ষণ, সন্ত্রাসবাদ দমন কৌশল এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি রয়েছে। ২০১৮ সালে জর্ডান ভারতীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। এবারের সফরে সেই পুরনো আগ্রহ চুক্তির রূপ নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।