স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি টিকিট বিক্রি! অতিরিক্ত ভিড়ের নেপথ্যে কারা? শতদ্রু দত্তের পুলিশি হেফাজতে নতুন তথ্য

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিওনেল মেসির শো ঘিরে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খলা ও ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্তের পরিধি বাড়াল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। ঘটনার মূল উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তের গ্রেফতারের পর এবার ভাঙচুরে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম শুভ্রপ্রতিম দে ও সৌরভ বসু।
তদন্তের জালে ৬ স্বতন্ত্র দফতরের আধিকারিক পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসা তথ্য যাচাই করতে এবং বিশৃঙ্খলার কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্তকারী সংস্থা এবার কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত স্বতন্ত্র দফতরের মোট ছ’জন আধিকারিককে সোমবার বিধাননগর দক্ষিণ থানায় তলব করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ছয়জনকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং পুরো জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়াটি ভিডিয়োগ্রাফি করা হবে। তদন্তকারীরা জানতে চাইছেন—অনুষ্ঠানের দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাঁদের দায়িত্ব কী ছিল, কোন সময়ে কে কী কাজ করেছেন বা কোথায় ভুল হয়েছে।
ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি তদন্তে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। পুলিশ জানতে পেরেছে যে, স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার তুলনায় প্রয়োজনের চেয়েও অনেক বেশি টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল। এই অতিরিক্ত টিকিট বিক্রিই ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার অন্যতম কারণ কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত কারা নিয়েছিলেন এবং সেই সিদ্ধান্তের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন ছিল কি না, সেই বিষয়েও তদন্ত চলছে।
শতদ্রু দত্তের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত এদিকে, বিশৃঙ্খলার ঘটনায় মূল আয়োজক শতদ্রু দত্তকে সেদিনই গ্রেফতারের পর রবিবার বিধাননগর আদালতে পেশ করা হয়। আদালত তাঁকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। শতদ্রুকে হেফাজতে পেয়ে তদন্তকারীরা তাঁকে জেরা করে আরও কয়েকজনের নাম জানতে পেরেছেন, যার ভিত্তিতে তদন্তের জাল আরও বিস্তৃত হচ্ছে।
বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমার আগেই জানিয়েছিলেন, “বেশ কয়েকজনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠানো হবে।” কমিশনারের বক্তব্যেই স্পষ্ট, তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে এবং প্রয়োজনে আরও গ্রেফতারি হতে পারে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করতে সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে, এই ঘটনার দায় কার, সেই উত্তর খুঁজতেই তৎপর বিধাননগর পুলিশ।