‘২০২৬-এর আগে বকেয়া ডিএ চাই’- মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি চিঠি শিক্ষক সংগঠনের, চাপ বাড়ল নবান্নের ওপর

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারী এবং শিক্ষকরা দীর্ঘকাল ধরে মহার্ঘ ভাতা (DA) এবং নতুন বেতন কমিশন (7th Pay Commission) গঠনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। ২০২৫ সাল প্রায় শেষ হতে চললেও, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে সপ্তম পে কমিশন নিয়ে সরকারের তরফে কোনো স্পষ্ট ঘোষণা না হওয়ায় কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আইনি পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি এই পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনগুলি ফের সরব হয়েছে। সম্প্রতি, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন ইউনিটি ফোরাম রাজ্যের ওপর চাপ সৃষ্টি করে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তাদের দাবি, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যকে অবশ্যই সপ্তম পে কমিশন গঠন করতে হবে। অন্যথায়, ইউনিটি ফোরাম আইনি পথে হাঁটবে এবং হাইকোর্টে মামলা দায়ের করবে।
মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ ‘শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ’ ইউনিটি ফোরামের কঠোর অবস্থানের পর এবার শিক্ষক সংগঠন ‘শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ’ সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। গত শুক্রবার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে।
মূল দাবি: বকেয়া ডিএ এবং নতুন কমিশন চিঠিতে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের দীর্ঘদিনের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (DA) অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার এবং নতুন বেতন কমিশন গঠনের জোরালো দাবি জানানো হয়েছে। ‘শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ’ আশা করছে, সরকার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাঁদের দাবির বিচার করবে।
এআইসিপিআই (AICPI) অনুযায়ী ডিএ দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া চিঠিতে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার দাবি করা হয়েছে। সংগঠনটি চাইছে, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (AICPI) অনুযায়ী বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হোক।
ঐতিহ্য মেনে কমিশন গঠনের অনুরোধ চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, অতীতে কেন্দ্রের বেতন কমিশন গঠনের পরই রাজ্যে নতুন কমিশন গঠিত হওয়ার একটি প্রথা ছিল। সেই ঐতিহ্য মেনেই দ্রুত রাজ্যের শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন গঠনের অনুরোধ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে।
ভবিষ্যতের আশঙ্কা উল্লেখ্য, সব ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য আসছে অষ্টম পে কমিশন (8th Pay Commission)। অথচ পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা এখনও ষষ্ঠ বেতন কমিশনের (6th Pay Commission) অধীনে রয়েছেন। এই বিশাল ফারাক কর্মীদের মধ্যে হতাশা বাড়াচ্ছে। ইউনিটি ফোরাম এবং শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে নবান্ন এবার কী পদক্ষেপ নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী।