ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেতে পারে ৪০ লক্ষ নাম! SIR-এর জটিলতায় আতঙ্কিত মতুয়া ধর্ম মহাসংঘ, রাজভবনে ডেপুটেশন

পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ তপসিলি জাতি (SC), তপসিলি উপজাতি (ST) এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই উদ্বেগ প্রকাশ করে শিডিউল কাস্ট ফেডারেশন মতুয়া ধর্ম মহাসংঘ বিষয়টি নিয়ে আজ প্রথমে রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে এবং পরে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে।
আশঙ্কার কারণ কী?
ফেডারেশনের দাবি, দেশভাগের সময় এবং তার পরেও বিভিন্ন উৎপীড়নের কারণে যেসব মানুষ ওপার বাংলা থেকে এই রাজ্যে এসেছেন, তাঁদের অনেকের কাছেই স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR)-এর ফর্ম পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় বৈধ নথিপত্র নেই। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যে ১২টি নথি চাওয়া হয়েছে, নদী ভাঙন-সহ বিভিন্ন কারণে অনেকেই তা দেখাতে পারবেন না। এর ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেতে পারে।
শিডিউল কাস্ট ফেডারেশন মতুয়া ধর্ম মহাসংঘের সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় মল্লিক বলেন,
“আমরা রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। আমাদের দাবি হল যে SIR-এর সরলীকরণ করে ২০০২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত ভোট দিয়ে যারা সরকার গঠন করেছে, সেই সব ভোটারের ভোটকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। যদি কারও নাম তালিকায় না থাকে, তাহলে তাঁদের কাকা, মামা, জ্যাঠা-জেঠিমা বা লতায় পাতায় পরিবারের কারও ভোট সুরক্ষিত করতে হবে।”
অনশন ও রাজনৈতিক চাপান-উতোর:
এর আগে, নভেম্বরের শুরুতে এসআইআর হলে মতুয়াদের নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা থেকে এর বিরুদ্ধে আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর। তিনি বাস্তুচ্যুত সকলের জন্য নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিও জানিয়েছিলেন।
যদিও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা শান্তনু ঠাকুর সেই অনশন কর্মসূচি নিয়ে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, “ভোট ব্যাংকের রাজনীতির জন্য তিনি মানুষকে অনশনে যেতে বাধ্য করছেন। এই কর্মসূচিতে কোনও মতুয়া ভক্ত নেই, বরং মুসলমান রোহিঙ্গারা মতুয়া সেজে বসে আছে।”
রাজনৈতিক চাপান-উতোরের মধ্যেই লক্ষ লক্ষ মানুষের ভোট সুরক্ষিত রাখার দাবিতে ফেডারেশনের এই আবেদন রাজ্যের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এলো।