কলকাতার হোটেলে ফের রহস্যমৃত্যু! রাজডাঙার হোটেলে যুবকের দেহ উদ্ধার, নাক-মুখে রক্ত, প্রাথমিক অনুমান খুনের

কলকাতার রাজডাঙা এলাকার একটি হোটেলে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শনিবার দুপুরে ওই হোটেলের একটি ঘর থেকে আদর্শ লোসাকা (৩৩) নামের এক যুবকের দেহ উদ্ধার করা হয়। বীরভূমের দুবরাজপুরের বাসিন্দা ওই যুবকের নাক দিয়ে রক্ত বেরিয়েছিল এবং শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটিকে খুনের ঘটনা বলেই সন্দেহ করছে।

ঘরে প্রবেশ ও প্রস্থান:

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে আদর্শ লোসাকা আরও দু’জনের সঙ্গে হোটেলের ওই ঘরটি বুক করেছিলেন। গভীর রাতে বাকি দু’জনের মধ্যে এক মহিলা বেরিয়ে গেলেও আদর্শ আর ঘর থেকে বের হননি।

শনিবার দুপুরে দীর্ঘক্ষণ ঘর থেকে কোনও সাড়াশব্দ না পাওয়ায় হোটেলের কর্মীরা ডাকাডাকি শুরু করেন। পরে দরজা খুলে দেখা যায়, আদর্শ মাটিতে পড়ে আছেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

গোয়েন্দা প্রধানের ঘটনাস্থল পরিদর্শন

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফরেন্সিক টিম, ডগ স্কোয়াড এবং কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। পরে ঘটনাস্থলে যান কলকাতার গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার। তিনি হোটেলের ভিতরে গিয়ে পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।

গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার বাইরে এসে জানান, মৃতের নাম আদর্শ লোসাকা এবং তাঁর বাড়ি বীরভূমের দুবরাজপুরে। কী কারণে তিনি কলকাতায় এসেছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে মনে করা হচ্ছে, এটি খুনের ঘটনা।

পার্ক স্ট্রিট রহস্যের ছায়া?

সাম্প্রতিক সময়ে পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার একটি হোটেল থেকে এক ব্যক্তির দেহ বক্স খাটের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনায় জড়িত দু’জন ব্যক্তিও একই কায়দায় হোটেল থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। তদন্তে উঠে এসেছিল যে মৃত ব্যক্তি অ্যান্টিক জিনিসপত্রের চোরাকারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সেই কারণেই তাঁকে খুন করা হয়।

লালবাজারের আধিকারিকরা এখন খতিয়ে দেখছেন, রাজডাঙার এই ঘটনার নেপথ্যে নারীঘটিত কোনও বিষয় আছে, নাকি এর সঙ্গে অন্য কোনো অবৈধ চক্রের যোগসূত্র রয়েছে। পুলিশের একটি সূত্রের বক্তব্য, যেহেতু আদর্শের সঙ্গে একজন মহিলা ছিলেন, তাই এই খুনের ঘটনায় বাকি দু’জনের জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

তদন্তের স্বার্থে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং হোটেলের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মৃতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর আসল কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন রূপেশ কুমার।