আফগান বাণিজ্যমন্ত্রীর ভারত সফর! আটকে থাকা পেমেন্ট সিস্টেম ও চাবাহার বন্দর নিয়ে আলোচনায় দুই দেশ

ভারত এবং আফগানিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে এক নতুন দিগন্ত খুলতে চলেছে আকাশপথ। পাকিস্তানের সীমান্তে বাড়তি কড়াকড়ির কারণে আফগান ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে যে ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন, তার বিকল্প হিসেবেই খুব শীঘ্রই কাবুল থেকে দিল্লি ও অমৃতসরের মধ্যে নিয়মিত এয়ার কার্গো পরিষেবা (Air Cargo Service) শুরু হতে চলেছে। এই ঘোষণা দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
আফগান বাণিজ্যমন্ত্রীর সফরে বড় ঘোষণা
এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি এমন এক সময়ে ঘোষণা করা হলো, যখন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী আল-হজ নূরুদ্দিন অজিজি ভারতের পাঁচ দিনের সফরে এসেছেন।
দিল্লিতে PHDCCI–র এক অনুষ্ঠানে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিক আনন্দ প্রকাশ জানান, কাবুল-দিল্লি এবং কাবুল-অমৃতসর এয়ার করিডর ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়েছে এবং এই রুটে মালবাহী বিমান চলাচল খুব শীঘ্রই শুরু হবে। তিনি মনে করেন, এই উদ্যোগ দুই দেশের সংযোগ ও বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও গভীর করবে।
বাণিজ্যের বিষয়ে দুই দেশের আগ্রহ
আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতকে আরও বেশি কৃষিজ পণ্য—বিশেষত তাজা ফল—রপ্তানি করার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। এর ফলে ভারতীয় বাজারে আফগানি পণ্যের সরবরাহ বাড়বে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। পাল্টা, ভারত থেকে ওষুধ, মেশিনারি এবং টেক্সটাইল কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে কাবুল।
শুধু আকাশপথ নয়, এই সফরে ভারত ও আফগানিস্তান ইরানের চাবাহার বন্দরকে কেন্দ্র করে একটি নির্ভরযোগ্য পরিবহন করিডর গড়ে তোলার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেছে।
পেমেন্ট জটিলতা কাটানোর উদ্যোগ
বর্তমানে দুই দেশের বাণিজ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যার মধ্যে রয়েছে পেমেন্ট সিস্টেম, কারণ আফগান ব্যাংকগুলির কাছে SWIFT-এর অ্যাক্সেস নেই। এই সফরেই দুই দেশের মধ্যে আটকে থাকা অর্থ লেনদেনের পথ পুনরায় চালুর বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে এটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠায় পাকিস্তান স্থলসীমা বন্ধ করে দিয়েছিল। এর ফলে হাজার হাজার টন আফগানি ফল-সবজি সীমান্তে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে তালিবান সরকার তাদের ব্যবসায়ীদের পাকিস্তানের উপর নির্ভরতা কমাতে বিকল্প বাজার ও রুট খুঁজে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। অজিজির ভারত সফর সেই কৌশলগত অবস্থানেরই অংশ।