‘মানুষ মরছে, আর আপনারা!’, প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে রাজনীতি করায় বিরোধীদের তুলোধনা মমতার

রাজ্যের ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে রাজনীতি করার প্রবণতার এবার তীব্র সমালোচনা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে টানা বৃষ্টি, ধস, জলস্ফীতি এবং সেতু ভেঙে পড়ার মতো স্পর্শকাতর ঘটনাগুলি নিয়ে বিরোধীদের একাংশের বক্তব্যকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে শোনা গেল তীব্র ক্ষোভ।

মমতা বলেন, “মানুষ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মারা যাচ্ছেন। কিন্তু তার পরেও বলা হচ্ছে সেতু ভেঙে মৃত্যু হয়েছে। অন্য রাজ্যেও প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটছে। আমরা তা নিয়ে রাজনীতি করি না।”

‘চেয়ারে বসে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য!’
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এই ধরণের ঘটনাগুলি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং মানবিকতার দিক থেকে দেখাই উচিত। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি এই দুর্দিনেও রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন, যা একেবারেই অনুচিত। রাজ্যের একাধিক জেলায় নদী উপচে পড়া এবং ধসের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার প্রেক্ষাপটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,

“প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে আমরা মানুষের পাশে থাকি। প্রশাসন, সেনা, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী— সবাই মিলে কাজ করছে। কিন্তু কেউ কেউ চেয়ারে বসে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করছেন, যেটা একেবারেই অনভিপ্রেত।”

‘দুর্যোগ তো সারাদেশেই হচ্ছে!’
সম্প্রতি যে সেতুটি ভেঙে পড়েছে, তা নিয়ে বিরোধীরা রাজ্যের অব্যবস্থা ও ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই প্রসঙ্গে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজনীতি করতে হলে সংসদে, বিধানসভায় করুন। কিন্তু যখন মানুষ বিপদে আছে, তখন তাদের পাশে না দাঁড়িয়ে দোষারোপ করলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, দেশের অন্যান্য রাজ্যে যখন ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়, যেমন— হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্র— তখন সেইসব ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় না।

তিনি আরও বলেন, “দুর্যোগ তো সারাদেশেই হচ্ছে। কোথাও কি সেতু ভাঙছে না? মৃত্যুর খবর কি নেই? তাহলে শুধু বাংলা নিয়ে এত কুৎসা কেন?”

উল্লেখ্য, প্রশাসন দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের জন্য আর্থিক সাহায্য ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই দুর্যোগ নিয়ে রাজনীতি শুরু হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর এই কড়া প্রতিক্রিয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।