নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, তবুও রাজ্যজুড়ে সম্মান! অভাবী ঘরের এই ছেলের যোগা-প্রতিভা দেখলে আপনিও বলবেন ‘অবিশ্বাস্য’

বয়স মাত্র সাড়ে দশ বছর, অথচ তার শারীরিক নমনীয়তা (Flexibility) দেখলে মনে হবে যেন শরীরে একটাও হাড় নেই! অবিশ্বাস্য কায়দায় সে নিজের শরীরকে যে কোনো দিকে বাঁকিয়ে ফেলতে পারে। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের এই বিস্ময়-বালক বিবেক মান্না এখন যোগব্যায়ামের (Yoga) মঞ্চে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে।

হাড় নেই যেন শরীরে!
দাঁতন থানার বাহারদল টিটিয়া গ্রামের বাসিন্দা, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র বিবেক মান্নার পারদর্শিতা যে কাউকে অবাক করে দেবে।

সে হাত দিয়ে অনায়াসে হাঁটতে পারে।

হাতে ভর দিয়ে শূন্যে পা তুলে সেই পা দিয়েই সে চশমা পরতে পারে।

সবচেয়ে কঠিন হলো, হাতে ভর দিয়ে দু’পায়ের মাধ্যমে কাঁচের গ্লাসের মধ্যে রাখা জ্বলন্ত মোমবাতি তুলে আনতে পারে।

এমনকি মায়ের কাঁধে ভর দিয়েও সে পা উপর দিকে তুলে যোগা প্রদর্শন করে।

তার এই অসাধারণ দক্ষতা দেখে গ্রামবাসীরা তাকে ‘অস্থিহীন মানব’ আখ্যা দিয়েছেন।

অভাবের সংসারেও কঠোর অনুশীলন
বিবেক যে পরিবার থেকে এসেছে, সেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা। বাবা যুগল মান্না একটি সামান্য সেলুন দোকান চালিয়ে সংসার চালান। চরম দারিদ্রতা সত্ত্বেও নিজের কঠোর পরিশ্রম এবং বাবা-মায়ের সহযোগিতায় মাত্র দু’বছরের প্রশিক্ষণে বিবেক এই অসম্ভব দক্ষতা অর্জন করেছে।

সে প্রত্যন্ত গ্রামে প্রতিদিন সকালে কয়েক ঘণ্টা ধরে কঠোর অনুশীলন করে। স্কুলের প্রতিযোগিতা থেকেই তার এই প্রতিভার আত্মপ্রকাশ ঘটে। মাত্র দু’বছরের অনুশীলনেই সে জেলা ছাড়িয়ে রাজ্য স্তরের একাধিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার জিতেছে।

ছোট্ট বিবেকের এই অভাবনীয় কৃতিত্বে গর্বিত বাবা-মা থেকে শুরু করে পুরো গ্রামবাসী। তাদের আশা, এই প্রতিভা একদিন আরও বড় মঞ্চে দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।