দেশের একমাত্র ট্রেন, যেখানে খাবার কিনতে এক টাকাও লাগে না! কী রহস্য লুকিয়ে ‘সচখণ্ড এক্সপ্রেসে’?

ভারতীয় রেলে দূরপাল্লার যাত্রাপথে খাবার হয় বাড়ি থেকে আনতে হয়, নতুবা কিনে খেতে হয়। রাজধানী বা দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনে খাবারের দাম টিকিটের সঙ্গেই যুক্ত থাকে। কিন্তু ভারতে এমন একটি বিশেষ ট্রেন রয়েছে, যেখানে যাত্রাপথে সকল যাত্রী বিনামূল্যে খাবার পান। এই ট্রেনটি হলো সচখণ্ড এক্সপ্রেস (Sachkhand Express)।
বিনামূল্যে ৩৩ ঘণ্টার সফর:
এই ট্রেনটি মহারাষ্ট্রের নান্দেড থেকে পঞ্জাবের অমৃতসর পর্যন্ত যাতায়াত করে। ২ হাজার কিলোমিটারের এই দীর্ঘ যাত্রাপথে সময় লাগে প্রায় ৩৩ ঘণ্টা। এই পুরো সফরকালে যাত্রীদের খাবার কিনে খেতে হয় না। সকালের প্রাতরাশ থেকে শুরু করে দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবার, সবই বিনামূল্যে পান তাঁরা। ট্রেনের শ্রেণির ভিত্তিতে এই খাবার পাওয়ায় কোনও বিভেদ হয় না।
কেন এই বিশেষ ব্যবস্থা?
ট্রেনটি নান্দেড-এর হুজুর সাহিব গুরুদ্বার এবং অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরকে সংযুক্ত করে। এই দুটিই শিখ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র ধর্মীয় স্থান। সেই ধর্মীয় ভাবাবেগকে মাথায় রেখে, এই ট্রেনের সকল যাত্রীদের জন্য লঙ্গর (গুরুদ্বারের রান্নাঘর) থেকে বিনামূল্যে খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়।
স্বেচ্ছাসেবকরা পরিবেশন করেন খাবার:
সচখণ্ড এক্সপ্রেস তার যাত্রাপথে ৩৯টি স্টেশনে দাঁড়ায়। এর মধ্যে নয়া দিল্লি, ভোপাল, পার্ভনি, জলনা, ঔরঙ্গাবাদ ও মারাঠওয়াড়া—এই ৬টি স্টেশন থেকে স্বেচ্ছাসেবকরা ট্রেনে ওঠেন এবং যাত্রীদের মধ্যে খাবার পরিবেশন করেন।
বিনামূল্যে খাবার পাওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত একটাই— খাবারের জন্য এক টাকাও লাগবে না, তবে যাত্রীদের খাবার নেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে নিজেদের থালাবাসন সঙ্গে নিয়ে যেতে হয়।
খাবারের তালিকায় থাকে ভাত, ডাল, ছোলার তরকারি, খিচুড়ি, আলু ফুলকপির তরকারি এবং নানা সবজির তরকারি। ২৯ বছর ধরে এভাবে প্রতিদিন সচখণ্ড এক্সপ্রেসের যাত্রীরা লঙ্গর থেকে বিনামূল্যে খাবারের সুবিধা পাচ্ছেন।