মমতা তো আছেনই, শুভেন্দু, রিজিজুও এবার পাহাড়ে, উত্তরে ‘রাজনীতি’র ভিড়

টানা বৃষ্টি ও নিম্নচাপের জেরে উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ পরিস্থিতি। একের পর এক ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপটি শক্তি হারালেও ঘূর্ণাবর্ত হিসেবে এখনও উত্তর-পূর্ব বিহারে অবস্থান করছে, ফলে মঙ্গলবারও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এই বন্যায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দুর্গত উত্তরবঙ্গে এই মুহূর্তে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল তিনি হাসিমারা ও নাগরাকাটা পরিদর্শনের পর আজ ধস বিধ্বস্ত মিরিকে যাওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারপিছু ৫ লক্ষ টাকা এবং একজনকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিকে, এই পরিস্থিতিতে আজ বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের সঙ্গে দেখা করবেন।

বিপর্যয়ের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক তরজা। সোমবার জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা পরিদর্শনে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাংসদের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোঁড়া হয়। গুরুতর আহত খগেন মুর্মুকে দ্রুত শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁকে দিল্লির এইমসে স্থানান্তরিত করার খবর রয়েছে।

বিজেপি এই হামলার জন্য শাসকদল তৃণমূলকে দায়ী করলেও, তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই ঘটনার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেন এবং তৃণমূল ও বিজেপি উভয়কেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর পোস্টের কড়া নিন্দা করে পাল্টা লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী কোনও যাচাই করা প্রমাণ, আইনি তদন্ত বা প্রশাসনিক প্রতিবেদন ছাড়াই তৃণমূল কংগ্রেস এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সরাসরি দোষারোপ করেছেন… এটি নিম্নমানের রাজনীতির উদাহরণ।” তিনি সবাইকে প্ররোচনায় পা না-দিতে অনুরোধ করেন।

এই আবহে, আগামী বুধবার, ৮ অক্টোবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উত্তরবঙ্গ সফরের জল্পনা শুরু হয়েছে, যদিও এ বিষয়ে বঙ্গ বিজেপির পক্ষ থেকে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাতে নারাজ। শুভেন্দু অধিকারী উত্তরবঙ্গের বন্যার জন্য প্রশাসনিক ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন। এর আগে সোমবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যও উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন।