উত্তরবঙ্গের বিপর্যয়ে অ্যাকশনে রাজ্যপাল! হায়দরাবাদ থেকে সোজা বাগডোগরা, দ্রুত সমাধানের কী আশ্বাস দিলেন সিভি আনন্দ বোস?

উত্তরবঙ্গের বন্যা ও ধস পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে দ্রুত পদক্ষেপ নিলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (C. V. Ananda Bose)। সোমবার তিনি তাঁর হায়দরাবাদ সফর কাটছাঁট করে সরাসরি বাগডোগরায় পৌঁছন। সেখান থেকে সড়কপথে তিনি সরাসরি যান দুধিয়ায় (Dhudia), যেখানে বালাসন নদীর উপর থাকা ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি পরিদর্শন করেন।
দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং, তরাই-ডুয়ার্স-সহ সমতল অঞ্চল এখনও বিপর্যস্ত। ধসের কারণে শিলিগুড়ি-মিরিক এবং কালিম্পং-সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। স্থানীয় জনজীবন ও জরুরি সামগ্রী সরবরাহ ব্যবস্থাকে এই পরিস্থিতি গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।
“দোষ খোঁজার সময় নয়, আমি এসেছি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করতে”
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি, সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। তাঁদের সমস্যার কথা শোনেন এবং দ্রুত ত্রাণের ব্যবস্থার আশ্বাস দেন। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি একতা এবং যৌথ উদ্যোগের ওপর জোর দেন।
রাজ্যপাল বলেন, “আমি নিজে গ্রাউন্ড জিরোয় পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছি। এখানে কী কী সমস্যা রয়েছে, আর সেগুলোর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেছি। যা হয়েছে তা বিধ্বংসী। সাধারণ মানুষের উপর খুব গভীর প্রভাব ফেলেছে এই বিপর্যয়।”
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “এখন কাউকে দোষারোপ করার সময় নয়। আমি এখানে পরিস্থিতি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করতে এসেছি, ফল্ট ফাইন্ডিং বা কারও দোষ খুঁজতে আসিনি। এখন আমাদের সবার অগ্রাধিকার হল ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো ও তাদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা।”
রাজ্যপাল আরও জানান, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় এই সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ করা হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানের জন্য যা করণীয়, তার সমস্তরকম পদক্ষেপ করা হবে।
রাজ্যপালের আগেই উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, রাজ্যপালের পরিদর্শনের দিন সকালেই উত্তরবঙ্গে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee)। তিনিও ভেদাভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কারও কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না। ভুলে যান এখন রাজনীতি। বিভেদ ভুলে সাংসদ বিধায়ক সবাই একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, বন্যায় কত ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়েছে, তার সার্ভে করে দেখা হবে। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল— দুই সাংবিধানিক প্রধানের একযোগে উত্তরবঙ্গে পৌঁছনো এই বিপর্যয়ের গুরুত্বকেই তুলে ধরছে। আপনি কি মনে করেন, কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব? কমেন্ট করে জানান আপনার মতামত।