উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বিপর্যয়, সমতলে ফেরার জন্য কোন কোন রাস্তা খোলা? বাগডোগরা-কলকাতা বিমানভাড়া ২১ হাজার

টানা বৃষ্টি ও ধসের কারণে উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসায় পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের সড়কপথে যোগাযোগ বেশিরভাগ জায়গায় বিচ্ছিন্ন। পুজোর মরশুমে ঘুরতে গিয়ে বহু পর্যটক সেখানে আটকে পড়েছেন। একদিকে যেমন জলদাপাড়ায় কাঠের সেতু ভেসে যাওয়ায় পর্যটকদের আর্থ মুভারে করে নদী পার করানো হয়েছে, তেমনই অন্যদিকে বিমান ও গাড়ির ভাড়া অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তাঁরা।

সমতলে ফেরার জন্য খোলা সড়কপথ
উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে ফিরতে নাজেহাল পরিস্থিতির মুখে পড়লেও, বেশ কিছু বিকল্প সড়কপথ এখনও আংশিকভাবে খোলা রয়েছে। বিপর্যয়ের মুখে আপাতত এই রাস্তাগুলি ব্যবহার করে পর্যটকেরা সমতলে নামতে পারছেন:

দার্জিলিং-শিলিগুড়ি:

দার্জিলিং-সুখনা-রংটং-কার্সিয়ং হয়ে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে শিলিগুড়ি যাওয়া যাবে।

পাঙ্খাবাড়ি-শিলিগুড়ি রোড খোলা রয়েছে।

মিরিক থেকে:

মিরিক থেকে পশুপতি-ঘুম-কার্সিয়ং হয়ে শিলিগুড়িতে নামা যাবে।

কালিম্পং রুট:

কালিম্পং হয়ে লাভা-লোলেগাঁও-গরুবাথানের রাস্তা ধরে শিলিগুড়ি ফেরা যাবে।

জাতীয় সড়ক:

১০ নম্বর জাতীয় সড়ক খোলা থাকলেও, যাতায়াতে ঝুঁকি রয়েছে।

আকাশপথে চরম ভোগান্তি, সড়কপথেও লুণ্ঠন
দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

বিমান ভাড়া: বাগডোগরা থেকে কলকাতায় আসার বিমানভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার টাকা! যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, বিমানের কনফার্মড টিকিটও ক্যানসেল হয়ে যাওয়ায় নতুন করে চড়া দামে টিকিট কাটতে হয়েছে।

গাড়ি ভাড়া: ভেঙে যাওয়া রাস্তার কারণে গাড়ির ভাড়া ৩,০০০ টাকার বদলে ৬,০০০ টাকা পর্যন্ত চাওয়া হচ্ছে।

তবে পর্যটকদের ফেরাতে রাজ্য সরকারের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এনবিএসটিসি-র ১০টি বাস উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হয়েছে এবং আরও ১৭টি বাস পাঠানোর খবর রয়েছে।

পাহাড়ে মৃত্যুমিছিল ও ভয়াবহতা
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মিরিক, দার্জিলিং, কার্শিয়ং, কালিম্পং সহ গোটা উত্তরবঙ্গ বিপর্যস্ত। শুধুমাত্র মিরিকেই ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কার্শিয়ঙে ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকায় একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বহু মানুষ নিখোঁজ। জলের তোড়ে কোথাও সেতু ভেঙেছে, কোথাও বাড়ি ঘর ভেসে গেছে, কোথাও রাস্তা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেছে। পর্যটকেরা কোনোমতে প্রাণ হাতে করে বাড়ি ফিরেছেন।

Editor001
  • Editor001