‘ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঠিক নয়, আইন আইনের পথে চলুক’! হামলার নিন্দা করেও বিজেপিকে কড়া বার্তা কুণাল ঘোষের,

উত্তরবঙ্গের বন্যা বিধ্বস্ত নাগরাকাটা পরিদর্শনে গিয়ে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে চরম বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে তৃণমূল এই ঘটনাকে জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে দাবি করছে, অন্যদিকে বিজেপি এই হামলাকে শাসকদলের ‘চক্রান্ত’ বলে অভিহিত করেছে।

কুণাল ঘোষের কড়া বার্তা: ‘বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছিল’
হামলার ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি এক্সে (X) লিখেছেন, “ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এভাবে হতে পারে না। যারাই করুক, ঠিক করেনি। আইন আইনের পথে চলুক।” হামলার নিন্দা করলেও, তিনি এই ঘটনার জন্য বিজেপির বিরুদ্ধে জনমানসে জমা হওয়া ক্ষোভকেই দায়ী করেছেন।

কুণাল ঘোষ তীব্র আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “বিজেপিও মনে রাখুক সব মানুষ জানেন তাদের নেতারা একশো দিনের টাকা, আবাসের টাকা-সহ বহু প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করেছেন। যেটা পরে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে দিয়েছেন।” তিনি আরও দাবি করেন, “বিজেপি বাংলা ভাষাকে অপমান করছে। এরপর যদি বন্যা এলাকায় কেউ ফটো সেশন করতে ঢোকেন, তাহলে সেটাকে প্ররোচনাই ধরা ভালো।”

শুভেন্দুর পাল্টা অভিযোগ: ‘আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করছেন মমতা’
বিজেপি এই হামলার ঘটনাকে তৃণমূলের ইচ্ছাকৃত চক্রান্ত বলে দাবি করেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, বিধ্বংসী বন্যায় যখন মানুষ মারা যাচ্ছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী টলিউডের সেলিব্রিটিদের সঙ্গে মঞ্চে নাচানাচি করছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই আচরণে মানুষের কাছে খারাপ বার্তা গেছে, যা ধামাচাপা দিতেই বিজেপি নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করানো হয়েছে।

শুভেন্দু অধিকারী এক্সে (X) লেখেন, “নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে ও ক্রমবর্ধমান জনরোষে হতচকিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরী করার অস্ত্রটিকে বেছে নিয়েছেন— তাঁর তথাকথিত বিশেষ সম্প্রদায়-এর গুন্ডাদের বিজেপি নেতাদের ওপর হামলা করতে উস্কানি দিয়েছেন।” তাঁর দাবি, এই হামলার উদ্দেশ্য বিজেপিকে ত্রাণ কাজ থেকে বিরত রাখা।

কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বের তোপ
রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বও এই ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র তোপ দেগেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গলের রাজত্ব চালাচ্ছে।” একইভাবে তৃণমূলকে বিঁধেছেন অমিত মালব্য এবং সুধাংশু দ্বিবেদী।

অন্যদিকে, তুমুল বিতর্কের মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “আমি চাইনা কোথাও আইন শৃঙ্খলা ভঙ্গ হোক। হিংসা চাইনা। আমি চেয়েছিলাম সবাই একসাথে মানুষের পাশে দাঁড়াব। কিন্তু রাজনীতি করতে এলে মানুষ তার জবাব দেবে যা আজ দিয়েছে।”

Editor001
  • Editor001