ভোটারদের জন্য ‘ডিজিটাল বিপ্লব’! মোবাইল জমা, পারিশ্রমিক বৃদ্ধি-সহ ১৭টি নতুন নিয়ম আনল নির্বাচন কমিশন, বিহার থেকে শুরু

সোমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন (ECI) বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করার পাশাপাশিই দেশে ভোট প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, আধুনিক এবং অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে ১৭টি নতুন উদ্যোগের ঘোষণা করেছে। বিহারে এই উদ্যোগগুলি কার্যকর হলেও আগামী দিনে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও তা ধাপে ধাপে চালু করা হবে।
বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা আসনে দুই দফায় ভোট হবে ৬ ও ১১ নভেম্বর, ভোট গণনা ১৪ নভেম্বর। এই নির্বাচনের আবহে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার যে পরিবর্তনগুলির কথা জানিয়েছেন, তা ভোট পরিচালনায় এক বড় ‘রিফর্ম’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের ১৭টি নতুন উদ্যোগ:
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এই উদ্যোগগুলি ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে ভোটারের অভিজ্ঞতা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তন আনবে:
ভোটারের সুবিধা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি:
মোবাইল জমা বাধ্যতামূলক: ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের জন্য মোবাইল জমা দেওয়ার আলাদা কাউন্টার থাকবে। কোনো ভোটার বুথে ফোন নিয়ে যেতে পারবেন না।
১,২০০ ভোটারের সীমা: প্রতিটি বুথে সর্বাধিক ১ হাজার ২০০ ভোটার থাকবে। ভিড় কমাতে নতুন বুথ তৈরি করা হবে।
পরিষ্কার ভোটার স্লিপ: ভোটারের সিরিয়াল ও পার্ট নম্বর স্পষ্টভাবে ছাপা থাকবে।
ফ্রি EPIC সরবরাহ: ১৫ দিনের মধ্যে EPIC কার্ড ভোটারের হাতে পৌঁছে যাবে, প্রতিটি ধাপে এসএমএস-এর মাধ্যমে অগ্রগতি জানানো হবে।
প্রার্থীদের বুথ ১০০ মিটারের বাইরে: ভোটের দিনে পোলিং স্টেশন থেকে প্রার্থীদের বুথ কমপক্ষে ১০০ মিটার দূরে রাখতে হবে।
সব বুথে ওয়েবকাস্টিং: ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন রাখতে সমস্ত বুথে ওয়েবকাস্টিং করা হবে।
প্রযুক্তি ও কর্মী ব্যবস্থাপনা:
কর্মীদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি: BLO, সুপারভাইজার, ভোট ও গণনা কর্মী, CAPF, পর্যবেক্ষক ও মাইক্রো-অবজার্ভারদের ভাতা বাড়ানো হয়েছে। প্রথমবার ERO ও AERO-দেরও সম্মানী দেওয়া হবে।
ডিজিটাল ইনডেক্স কার্ড: প্রযুক্তিনির্ভর ডেটা অ্যাকসেস সিস্টেম চালু হবে, যাতে নির্বাচনী তথ্য সহজে পাওয়া যায়।
এক জায়গায় ডিজিটাল পরিষেবা: ECINet অ্যাপে ভোটের দিন প্রতি দুই ঘণ্টায় ভোটদানের হার আপলোড করবেন প্রিসাইডিং অফিসাররা।
BLO-দের আইডি কার্ড: ফিল্ড পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও আস্থা বাড়াতে BLO-দের জন্য পরিচয়পত্র চালু হয়েছে।
গণনা ও আইনি সংস্কার:
EVM ব্যালট গাইডলাইন পরিবর্তন: ব্যালট পেপারে এখন থেকে প্রার্থীদের রঙিন ছবি থাকবে, যাতে পড়া সহজ হয়।
VVPAT যাচাই বাধ্যতামূলক: ভোটের ফল ও ফর্ম ১৭সি-র মধ্যে কোনও অমিল ধরা পড়লে VVPAT স্লিপ গণনা বাধ্যতামূলক হবে।
পোস্টাল ব্যালট গণনা: পোস্টাল ব্যালটে প্রাপ্ত ভোটের গণনা শেষ না হলে ইভিএম গণনার শেষ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ড শুরু করা যাবে না।
বিশেষ ভোটার তালিকা পুনর্বিবেচনা: যোগ্য কেউ বাদ না পড়ে এবং অযোগ্য কেউ অন্তর্ভুক্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতে পরিশোধনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
প্রশিক্ষণে জোর: BLO, বুথ লেভেল এজেন্ট এবং পুলিশ বাহিনীকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।