সুপ্রিম কোর্টে জুতো হামলার পর মুখ খুললেন সনিয়া গান্ধী! ‘এটি সংবিধানের উপর সরাসরি আঘাত’, চরম উষ্মা প্রকাশ কংগ্রেস নেত্রীর

সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এক নজিরবিহীন ঘটনায় প্রধান বিচারপতি বি. আর. গাভাইকে (CJI B.R. Gavai) লক্ষ্য করে জুতো ছোড়ার চেষ্টার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেস সংসদীয় দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী। বিচারপতি গাভাইয়ের দিকে এক আইনজীবী হামলা চালানোর পর এই ঘটনাটিকে তিনি ‘সংবিধানের মূল ভাবনার প্রতি সরাসরি আঘাত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
“সংবিধানের মূল্যবোধের অপমান”: সনিয়া গান্ধী
এক বিবৃতিতে সনিয়া গান্ধী বলেন, “এই নিন্দনীয় ঘটনায় যে ধাক্কা লেগেছে, তা কেবল একজন ব্যক্তির প্রতি নয় — আমাদের সংবিধানের মূল ভাবনার প্রতিও এ এক সরাসরি আঘাত। সুপ্রিম কোর্টে বসেই প্রধান বিচারপতির উপর এমন আক্রমণের চেষ্টা গণতন্ত্রের মূল্যবোধের অপমান।”
তিনি প্রধান বিচারপতির সংযমের প্রশংসা করে বলেন, “বিচারপতি গাভাই অত্যন্ত সংযম ও শালীনতা দেখিয়েছেন। এখন গোটা দেশকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁর পাশে দাঁড়াতে হবে — ক্রোধ ও বেদনায় ভরপুর হলেও সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করাটাই আসল কর্তব্য।”
পর্যবেক্ষকদের মতে, সনিয়ার এই বিবৃতিতে উগ্র ‘সনাতনী’ বলে দাবি করা এক অংশের সমালোচনা লুকিয়ে রয়েছে। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, নিজেদের হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী দাবি করা কিছু অংশ বিচার ব্যবস্থা ও সাংবিধানিক গণতন্ত্রকে অপমান করতেও ভয় পাচ্ছে না।
কী ঘটেছিল আদালতে?
৭১ বছর বয়সি আইনজীবী রাকেশ কিশোর সোমবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা উল্লেখের সময় হঠাৎই প্রধান বিচারপতির দিকে এগিয়ে এসে জুতো ছোড়ার চেষ্টা করেন। আদালতের নিরাপত্তারক্ষীরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আটক করেন।
জানা যায়, ওই আইনজীবী ‘খাজুরাহো মন্দির’ সংক্রান্ত মামলায় প্রধান বিচারপতির মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁর স্লোগান ছিল— “সনাতন ধর্মের অপমান সহ্য করবে না হিন্দুস্থান।”
পুলিশের পদক্ষেপ ও বার কাউন্সিলের সাসপেনশন
আদালতের ভেতরে এমন ঘটনার পরও প্রধান বিচারপতি গাভাই তাঁর নির্বিকার স্বভাব বজায় রাখেন। তিনি পুলিশকে নির্দেশ দেন, “এসব উপেক্ষা করুন। ওঁকে সতর্ক করে ছেড়ে দিন।” এই নির্দেশ মেনে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিযুক্ত আইনজীবীকে মুক্তি দেওয়া হয়।
তবে, আদালতের শালীনতা লঙ্ঘনের জন্য এটিকে গুরুতর অপরাধ আখ্যা দিয়ে ভারতের বার কাউন্সিল আইনজীবী রাকেশ কিশোরকে আপাতত সাসপেন্ড করেছে। বিচারপতি গাভাই যেমন বলেছিলেন, “এসব ঘটনায় আমরা বিভ্রান্ত হই না,” তেমনই রাজনৈতিক মহল থেকে আহ্বান এসেছে— বিচারব্যবস্থার মর্যাদা রক্ষায় সকলকে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।