যুদ্ধক্ষেত্রে ভারতের নতুন ‘গেম চেঞ্জার’, তেজস Mk2 কেবল আপগ্রেড নয়, এটি বৃহত্তর এবং আরও শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম

ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ.পি. সিং সম্প্রতি দেশীয় তৈরি হালকা যুদ্ধ বিমান (LCA) তেজস-এর উন্নয়ন সম্পর্কে এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, বর্তমানে তৈরি হতে চলা তেজস এমকে২ (Tejas Mk2) তার বিদ্যমান উন্নত সংস্করণ তেজস এমকে১এ (Mk1A) থেকে কেবল এক ধাপ এগিয়ে নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর এবং আরও সক্ষম প্ল্যাটফর্ম।

বিমান বাহিনী প্রধানের এই মন্তব্য ভারতীয় বিমান বাহিনীর আধুনিকীকরণ এবং ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তেজস এমকে২ ভারতীয় বিমান বাহিনীর পুরনো বিমান যেমন Mirage 2000, Jaguar এবং MiG-29 প্রতিস্থাপনের মূল চাবিকাঠি হবে।

কেন তেজস Mk2 Mk1A থেকে সম্পূর্ণ আলাদা?
এয়ার চিফ মার্শালের বক্তব্য অনুযায়ী, তেজস এমকে২ এবং বিদ্যমান তেজস এমকে১এ-এর মধ্যে তিনটি মূল পার্থক্য রয়েছে, যা এটিকে আলাদা এবং যুদ্ধক্ষেত্রে আরও বেশি সক্ষম করে তুলবে:

১. বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম ও মারাত্মক অগ্নিশক্তি
তেজস Mk2-কে Mk1A-এর চেয়ে বৃহত্তর বিমান হিসেবে ডিজাইন করা হচ্ছে। এই বৃহত্তর এয়ারফ্রেম Mk2-কে দুটি সুবিধা দেবে:

অস্ত্র বহন ক্ষমতা বৃদ্ধি: Mk2-এর পেলোড এবং অস্ত্র ধারণক্ষমতা Mk1A-এর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হবে। এর ফলে এটি একবারে আরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র, বোমা এবং অন্যান্য অস্ত্র বহন করতে পারবে, যার ফলে এর প্রাণঘাতী ক্ষমতা বহুগুণ বাড়বে।

ভারী অস্ত্র বহনে সক্ষম: বিমান বাহিনী প্রধান নিশ্চিত করেছেন যে, Mk2 বৃহত্তর এবং ভারী অস্ত্রগুলিকে একীভূত করতে সক্ষম হবে, যা Mk1A-তে সম্ভব ছিল না। এর ফলে এটি দূরবর্তী এবং শক্তিশালী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হবে।

২. উন্নত পরিসর ও সহনশীলতা
Mk2 বিমানটি আরও শক্তিশালী GE F414 ইঞ্জিন ব্যবহার করবে, যেখানে Mk1A GE F404 ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। শক্তিশালী ইঞ্জিন এবং উন্নত জ্বালানি দক্ষতার কারণে:

দীর্ঘ-পাল্লার মিশন: Mk2-এর অপারেশনাল রেঞ্জ Mk1A-এর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হবে, যা এটিকে দীর্ঘ-পাল্লার মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম করবে।

বর্ধিত সহনশীলতা: এই বিমানটি দীর্ঘ সময় ধরে বাতাসে থাকতে সক্ষম হবে (সহনশীলতা বৃদ্ধি), যা দীর্ঘ নজরদারি এবং বিমান যুদ্ধ মিশনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৩. পরবর্তী প্রজন্মের এভিওনিক্স ও রাডার
যদিও উভয় বিমান একই প্রজন্মের (৪.৫ প্রজন্মের), Mk2-তে পরবর্তী প্রজন্মের এভিওনিক্স এবং সেন্সর সিস্টেম থাকবে:

উত্তম রাডার: Mk2-তে উন্নত অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিকলি স্ক্যানড অ্যারে (AESA) “উত্তম” রাডারের একটি উন্নত সংস্করণ থাকবে। এই রাডারটি একই সাথে একাধিক লক্ষ্যবস্তু ট্র্যাক করতে পারে এবং জ্যামের ঝুঁকি কমায়।

মাল্টি-সেন্সর ডেটা ফিউশন: Mk2 মাল্টি-সেন্সর ডেটা ফিউশন প্রযুক্তি দিয়ে সজ্জিত হবে। এর মধ্যে একটি সমন্বিত IRST-এর মতো প্যাসিভ সেন্সর সিস্টেম থাকবে। এটি পাইলটদের দূর থেকে শত্রু বিমান সনাক্ত করার সুযোগ দেবে।

Editor001
  • Editor001