শ্মশান থেকে ফেরত গেল ‘মৃত’ দেহ! দাহ করতে এসেও দহন হল না, বনগাঁয় চাঞ্চল্যকর ঘটনা, পুলিশের নির্দেশে মর্গে পাঠানো হল দেহ

বনগাঁয় ঘটল এক নজিরবিহীন ঘটনা। দাহকার্যের জন্য আনা একটি দেহ শেষ পর্যন্ত শ্মশান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো হাসপাতালে। গভীর রাতে বনগাঁ উপেন্দ্রনাথ শেঠ স্মৃতি মহাশ্মশানে এই অদ্ভুত ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, বাগদা থানার অন্তর্গত বাসঘাটা এলাকা থেকে মহাদেব মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির দেহ দাহ করার জন্য আনা হয়েছিল। মহাদেববাবু একাই বাড়িতে থাকতেন, তাঁর তিন ছেলে ভিনরাজ্যে কর্মরত। প্রতিবেশীরা ঘরে তাঁকে শুয়ে থাকতে দেখে এবং ডেকে কোনও সাড়া না মেলায় পরিবারের সদস্যরা ধরে নেন তিনি মারা গিয়েছেন। স্থানীয় এক চিকিৎসকের শংসাপত্র সংগ্রহ করে বরফে রাখা দেহটি রাতে শ্মশানে নিয়ে আসা হয়।
‘ক্ষতচিহ্ন ও পচন’ দেখেই সন্দেহ শ্মশান কর্মীদের
কিন্তু শ্মশানে পৌঁছতেই চোখে পড়ে একাধিক অস্বাভাবিক বিষয়। শ্মশানের পৌরসভার কর্মীদের চোখে দেহে ক্ষতচিহ্ন এবং পচনের ছাপ ধরা পড়ায় সন্দেহ হয় তাঁদের।
শ্মশানের কর্মী অজয় বিশ্বাস জানান, “দেহে বেশ কিছু ক্ষতচিহ্ন ও পচন দেখা যায়, যা স্বাভাবিক মনে হয়নি। তাই আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাই।” এরপর পৌর প্রধানের নির্দেশে বনগাঁ থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
ময়নাতদন্তের নির্দেশে হাসপাতালমুখী দেহ
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে পরিবারের সদস্যদের কথাবার্তায় অসঙ্গতি ধরা পড়তেই দাহকার্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশ দ্রুত দেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।
পৌর প্রধান বলেন, “আমাদের কর্মীরা সময় মতো ব্যবস্থা না নিলে হয়তো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আড়ালেই থেকে যেত। ময়নাতদন্তের রিপোর্টই এখন মুখ্য।”
যে দেহটিকে পরিবার মৃত ভেবে দাহ করতে যাচ্ছিল, সেটির মৃত্যু কি স্বাভাবিক, নাকি এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে আরও কোনও রহস্য— এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মধ্যে। পুলিশ গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।