উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটার বামনডাঙায় দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে আক্রান্ত হয়েছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ এবং মালদা উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু। নদীর জলস্ফীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত এই এলাকায় ইতিমধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এমন চরম সঙ্কটের সময় দুই বিজেপি নেতা ছোট গাড়িতে ওই এলাকায় গেলে জনরোষের মুখে পড়েন। এই ঘটনা উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

লাঠি-জুতো-পাথরের হামলা, রক্তাক্ত বিধায়ক
বামনডাঙায় প্রবেশের সময় প্রায় কয়েকশো অসন্তুষ্ট মানুষের মুখে পড়েন দুই বিজেপি নেতা। হামলাকারীরা লাঠি, জুতো এবং পাথর নিক্ষেপ করে তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করার চেষ্টা করে। এই হামলায় সাংসদ খগেন মুর্মুর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং রক্ত ঝরতে শুরু করে। বিধায়ক শংকর ঘোষও ঘাড়ে আঘাত পান।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি অভিযোগ করেছে যে, তৃণমূল সমর্থকরাই এই হামলা চালিয়েছে।

‘মুখ্যমন্ত্রী আসবেন শুনেই এসেছিলেন’: পাল্টা উদয়ন গুহ
বিজেপি নেতাদের উপর হামলার প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ অবশ্য সরাসরি হামলাকে সমর্থন করেননি। তিনি বলেন, “আমরা এ ধরনের ঘটনা কখনোই সমর্থন করি না। হামলাকারীরা কোনো দলীয় পতাকা বহন করেননি। তবে যারা ওখানে গিয়েছিলেন, তারা এলাকার মানুষের সঙ্গে পরিচিত নন। এই ধরনের পরিস্থিতি দুঃখজনক।”

তবে তিনি আরও উল্লেখ করেন, “গতকাল কোনো বিজেপি বিধায়ক বা সাংসদ এলাকায় দেখা যায়নি। আজ মুখ্যমন্ত্রী নাগরাকাটায় আসবেন শুনেই তারা এসে মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেছেন। জনগণকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে উত্তেজিত করার চেষ্টা হয়েছে।” তাঁর ইঙ্গিত, বিজেপি নেতারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উত্তেজনা বাড়াতে গিয়েছিলেন।

মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫: ত্রাণ তৎপরতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা
নদীর অতিবৃদ্ধি ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রশাসন বর্তমানে ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে। মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত পাঁচ এবং নিখোঁজদের খোঁজ চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে নাগরাকাটায় পৌঁছেছেন।

বামনডাঙার এই ঘটনা স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে, দুর্যোগকবলিত অঞ্চলে রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি কখনো কখনো সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উসকানি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।