জলসংকট কাটানোর মাস্টারপ্ল্যান, টালিগঞ্জ-যাদবপুর ও বাইপাসের লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য বিরাট খবর দিল কলকাতা পুরসভা

কলকাতা পুরসভা শহরের দক্ষিণাংশে দীর্ঘদিনের পানীয় জলের ঘাটতি মেটাতে এক বড়সড় উদ্যোগ নিয়েছে। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগ জানিয়েছে, গড়িয়ার ঢালাই সেতুর জল শোধনাগার এবং ধাপার জয় হিন্দ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের সম্প্রসারণের কাজ ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প দুটি চালু হলে টালিগঞ্জ, যাদবপুর ও ইএম বাইপাস সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা নতুনভাবে জল সংযোগের সুবিধা পাবেন।

বাড়ছে উৎপাদন ক্ষমতা ও পাইপলাইন
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধাপার জয় হিন্দ জল শোধনাগারে ২০ কোটি গ্যালন সক্ষমতার একটি নতুন ইউনিট গড়ে তোলা হচ্ছে। ঢালাই সেতুর প্ল্যান্টের সম্প্রসারণের ফলে মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৫ কোটি গ্যালনে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জল প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত পুরসভার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বাইপাসের বিশাল অংশজুড়ে মূল পাইপলাইন বসানোর কাজও সমান্তরালভাবে শুরু হচ্ছে। মোট ১১৭ কিলোমিটার পাইপ বসানোর জন্য চুক্তি হয়েছে এবং ঠিকাদারদের এই মাসের শেষের দিকেই কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরসভা আশাবাদী, এর মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জলের উপর নির্ভরতা কমবে এবং নাগরিকরা নিয়মিত পরিশোধিত জল পাবেন।

জলাধার তৈরি এবং ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়
এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য মেয়র ফিরহাদ হাকিম গত অগস্ট মাসেই প্রকল্পস্থল পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তাদের কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। মেয়রের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ দ্রুত এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা।

পুরসভা আরও জানিয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় টালিগঞ্জ-যাদবপুর এবং ইএম বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় ১৮টি অর্ধ-ভূগর্ভস্থ জলাধার ও ক্যাপসুল বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে। এর বেশিরভাগই ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যেই চালু হবে। শহরজুড়ে জল সরবরাহ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে যে তীব্র জলচাহিদা তৈরি হয়েছে, এই প্রকল্প শেষ হলে সেই ঘাটতি অনেকটাই মিটবে বলে আশাবাদী প্রশাসন।