উত্তরবঙ্গে পাহাড়-জল মিশে মৃত্যুমিছিল! ২৩ জনের প্রাণহানির পর মানবিক মমতা, ঘোষণা করলেন একগুচ্ছ বড় সিদ্ধান্ত

উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় সম্প্রতি প্রবল বৃষ্টিপাত, ভূমিধস ও নদীভাঙনের কারণে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিপর্যয় কেড়ে নিয়েছে কমপক্ষে ২৩ জন মানুষের প্রাণ। এই হৃদয়বিদারক পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর জন্য একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ ও মানবিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি ঘোষণা করেছেন, মৃতদের পরিবার পিছু রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হবে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্তটি হলো— প্রতিটি পরিবার থেকে একজনকে হোম গার্ড হিসেবে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে, যাতে তারা দীর্ঘমেয়াদি জীবিকা এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।

পুনর্বাসন ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
ঘটনার পরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। বহু মানুষ গৃহহীন হয়েছেন, কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে এবং সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ ব্যাহত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই দুঃসময়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে আছি। সরকার তাদের পুনর্বাসনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।”

সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে, যেখানে গৃহহীন মানুষদের জন্য আশ্রয়, খাদ্য, চিকিৎসা এবং বিশুদ্ধ পানীয় জলের সরবরাহ করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, এই আর্থিক সাহায্য ও কর্মসংস্থানের সুযোগের মাধ্যমে পরিবারগুলোকে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার পথে নিয়ে যাওয়া হবে। গৃহহীনদের জন্য দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থার পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তাঘাট, সেতু ও যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত মেরামত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

ভবিষ্যতের জন্য কঠিন পদক্ষেপ
এই বিপর্যয় আবারও উত্তরবঙ্গের ভৌগোলিক ও পরিবেশগত সংকটগুলো তুলে ধরেছে। পাহাড়ি অঞ্চলে অপরিকল্পিত নির্মাণ, বন ধ্বংস ও নদী দূষণের ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা বাড়ছে। এই পরিস্থিতি রুখতে রাজ্য সরকার একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। বাঁধ নির্মাণ, নদীর গতিপথ নিয়ন্ত্রণ এবং টেকসই পরিকাঠামো গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হবে।

উত্তরবঙ্গের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজ্য সরকার যেভাবে সাড়া দিয়েছে এবং আর্থিক সাহায্য ও চাকরির সুযোগের মাধ্যমে সংহতির বার্তা দিয়েছে, তা কেবল মৃতদের পরিবারগুলোর জন্যই নয়, গোটা সমাজের জন্য এক আশার আলো।