বিহারে কংগ্রেসের ‘সেফটি ভালভ’! কেন অশোক গেহলট, ভূপেশ বাঘেল ও অধীর চৌধুরীকে পাঠালেন ১০ জনপথ

আসন্ন নির্বাচনের আগে বিহারের রাজনৈতিক সমীকরণ সাজাতে কংগ্রেস বড় পদক্ষেপ নিল। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী— ছত্তিশগড়ের ভূপেশ বাঘেল ও রাজস্থানের অশোক গেহলট— এবং পশ্চিমবঙ্গের বর্ষীয়ান নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে বিহারের জন্য পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করেছে। বিহারের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে এই হেভিওয়েট নেতাদের দায়িত্ব পাওয়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

যুব ও অভিজ্ঞতার সমন্বয়:
বর্তমানে বিহারে কংগ্রেসের দায়িত্বে থাকা কৃষ্ণা আল্লাভারু (কর্নাটকের নেতা ও রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ) তরুণ এবং আরজেডি (RJD)-র তেজস্বী যাদবের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য উপযুক্ত। তবে, মহাজোটের প্রধান চালক লালু যাদবের মতো প্রবীণ নেতার সঙ্গে আসন সমঝোতা এবং বৃহত্তর কৌশল নিয়ে আলোচনার জন্য একজন সিনিয়র ও অভিজ্ঞ নেতার প্রয়োজন ছিল। সেই শূন্যস্থান পূরণ করবেন গেহলট ও বাঘেল।

আসন বণ্টন ও ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ই মূল লক্ষ্য:
কংগ্রেসের কাছে এই দুই প্রবীণ নেতার প্রধান দায়িত্ব হবে:
১. আসন সমঝোতা: মহাজোটের শরিকদের সঙ্গে বিশেষত লালু যাদবের মতো কঠিন নেতার সঙ্গে আসন বণ্টনের মতো জটিল বিষয়ে সফলভাবে দর কষাকষি করা। জোটের শরিক দল, যেমন জেএমএম (JMM) ও পশুপতি পারসের আগমন ঘটলে আসন সংখ্যা নিয়ে জটিলতা বাড়বে।
২. উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ: টিকিট বন্টন শুরু হলে কংগ্রেসের মধ্যে প্রত্যাশিত ‘মাথা ফাটাফাটি’ ও অসন্তোষ সামলানো। গেহলট ও বাঘেল এই ধরনের ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এ যথেষ্ট অভিজ্ঞ।
৩. গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানো: বিহার কংগ্রেসের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা বিভিন্ন গোষ্ঠী ও অসন্তুষ্ট নেতাদের (যেমন প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি বা তাঁর সমর্থকদের) কথা শোনা এবং তাদের এক ছাতার তলায় আনা।

জাতপাতের সমীকরণ নয়, বড় মাপের নেতৃত্ব:
যদিও বাঘেল (কুর্মি) এবং গেহলট (মালী) দু’জনেই অনগ্রসর শ্রেণির, তবে এই নিয়োগের প্রধান উদ্দেশ্য জাতিগত ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব ফেলা নয়। কারণ, বিহারে কুর্মিরা ঐতিহ্যগতভাবে নীতীশ কুমারের সমর্থক এবং মালী সম্প্রদায়ের জনসংখ্যাও তুলনামূলকভাবে কম। বরং, ১০ জনপথের ঘনিষ্ঠ এবং মুখ্যমন্ত্রীত্বের অভিজ্ঞতা থাকা এই নেতাদের বড় মাপের নেতৃত্ব কাজে লাগিয়ে জোটের জটিলতা কাটানোই কংগ্রেসের মূল লক্ষ্য।

এঁরা বিহার কংগ্রেসে ‘সেফটি ভালভ’ হিসেবে কাজ করবেন, যার মূল কাজ হবে সমস্ত পক্ষের কথা শোনা, মানানো এবং দলীয় নেতা ও জোট শরিকদের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখা।