শিক্ষা-স্বাস্থ্য-রেলে মেগা চমক! ৮টি IIT সম্প্রসারণ, অমৃত ভারত এক্সপ্রেস ও ৫০,০০০ পরিবারের পাকা ঘরের অনুমোদন দিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ, ২৭ সেপ্টেম্বর, ওড়িশা সফরে গিয়ে রাজ্যের জন্য ৬০,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক জনমুখী উন্নয়নমূলক প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন। টেলিযোগাযোগ, রেল, স্বাস্থ্যসেবা, উচ্চশিক্ষা এবং গ্রামীণ আবাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে খবর, এই উপলক্ষে ঝাড়সুগুডায় তিনি এক বিশাল জনসভাতেও ভাষণ দেন।
টেলিকম সংযোগকে শক্তিশালী করতে প্রধানমন্ত্রী স্বদেশী প্রযুক্তিতে তৈরি প্রায় ৩৭,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৯৭,৫০০টিরও বেশি মোবাইল ৪জি টাওয়ারের উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে বিএসএনএল-এর ৯২,৬০০টিরও বেশি ৪জি সাইট রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ডিজিটাল ভারত নিধি-র অধীনে ১৮,৯০০টিরও বেশি ৪জি সাইট প্রত্যন্ত, সীমান্ত ও বামপন্থী চরমপন্থা প্রভাবিত এলাকার প্রায় ২৬,৭০০টি সংযোগহীন গ্রামকে যুক্ত করবে। এই টাওয়ারগুলি সৌরশক্তি চালিত হওয়ায় এটি ভারতের বৃহত্তম সবুজ টেলিকম সাইটের ক্লাস্টার হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ও রেলে বিরাট উন্নতি
ওড়িশার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যের পরিকাঠামোয় বড় পরিবর্তন আনতে একাধিক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে—
রেল: সম্বলপুর-সারলা রেল ফ্লাইওভারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, কোরাপুট-বাইগুডা লাইনের ডাবলিং এবং মনাবর-কোরাপুট-গোরাপুর লাইনের উৎসর্গ। এছাড়া, বেরহামপুর ও উধনা (সুরাট)-এর মধ্যে আরামদায়ক সংযোগের জন্য অমৃত ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করেন তিনি।
স্বাস্থ্য: বেরহামপুরের এমকেসিজি মেডিকেল কলেজ এবং সম্বলপুরের ভিমসার-কে বিশ্বমানের সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতালে উন্নীত করার জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এই উন্নত সুবিধাগুলিতে ট্রমা কেয়ার ইউনিট, ডেন্টাল কলেজ, মা ও শিশু যত্ন পরিষেবা এবং বর্ধিত শয্যা ক্ষমতা থাকবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে প্রায় ১১,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে আটটি আইআইটি—তিরুপতি, পালাক্কাদ, ভিলাই, জম্মু, ধারওয়াড়, যোধপুর, পাটনা এবং ইন্দোর—এর সম্প্রসারণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদী। এই সম্প্রসারণের ফলে আগামী চার বছরে দেশে আরও ১০,০০০ নতুন ছাত্রছাত্রীর জন্য আসন তৈরি হবে। এছাড়াও, দেশের ২৭৫টি রাজ্য ইঞ্জিনিয়ারিং এবং পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানে গুণমান, সমতা, গবেষণা এবং উদ্ভাবন বাড়াতে মেরিটাই (MERITE) স্কিম চালু করেন তিনি।
পাশাপাশি, ওড়িশা স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ফেজ II-ও চালু হয়। এর অধীনে সম্বলপুর ও বেরহামপুরে বিশ্ব দক্ষতা কেন্দ্র (World Skill Centre) স্থাপিত হবে। রাজ্যে ডিজিটাল শিক্ষা বাড়াতে ১৩০টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওয়াই-ফাই সুবিধা উৎসর্গ করা হয়, যার ফলে ২.৫ লক্ষেরও বেশি ছাত্রছাত্রী বিনামূল্যে দৈনিক ডেটা ব্যবহারের সুবিধা পাবে।
সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী অন্ত্যোদয় গৃহ যোজনার অধীনে ৫০,০০০ সুবিধাভোগীর মধ্যে অনুমোদনপত্র বিতরণ করেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বিধবা, দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকারসহ দুর্বল গ্রামীণ পরিবারগুলিকে পাকা বাড়ি এবং আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।