পাকিস্তানকে নিয়ে ট্রাম্পের নতুন চাল? শেহবাজ-মুনিরের সঙ্গে গোপন বৈঠক, ভারত কি সত্যিই চাপে?

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ট্রাম্পের স্বভাবসিদ্ধ দেরির কারণে এই বৈঠক ৩০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এবং রাজনৈতিক মহল এই বৈঠকটিকে ভারতের বিরুদ্ধে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।

ট্রাম্পের ব্যক্তিগত অভ্যাসমতোই, শেহবাজ শরিফ এবং আসিম মুনিরকে প্রায় আধ ঘণ্টা বাইরে অপেক্ষা করান তিনি। যখন দুই পাকিস্তানি নেতা ট্রাম্পের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখন ট্রাম্প সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তবে সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি শেহবাজ শরিফ এবং আসিম মুনিরকে ‘গ্রেট লিডার’ বলে অভিহিত করেন। ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়া এবং প্রেসিডেন্ট পুতিন যা করছেন, তাতে আমি খুবই অসন্তুষ্ট। আমার কাছে পাকিস্তানের মহান নেতা আসছেন, তাঁরা হয়তো এখন এই ঘরেই আছেন। কারণ আমি দেরি করে ফেলেছি…।’

সাধারণত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বিশাল প্রেস টিমকে সঙ্গে রাখেন। কিন্তু এই দিনের বৈঠকটি একটি বন্ধ কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কোনো সাংবাদিককে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। বৈঠকটি প্রায় এক ঘণ্টা ২০ মিনিট ধরে চলে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বৈঠকটি অত্যন্ত ইতিবাচক পরিবেশে হয়েছে। বৈঠকের পর প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ এবং ফিল্ড মার্শাল মুনির ট্রাম্পের সঙ্গে আন্তরিক আড্ডা দিচ্ছেন।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্ক মনে করছে, এই বৈঠকটি দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ। তারা এই বৈঠককে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। বৈঠকে ট্রাম্পের সঙ্গে ছিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও। উল্লেখ্য, জুলাই মাসে আমেরিকা এবং পাকিস্তান একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সম্ভাব্য তেলের মজুদ কাজে লাগাতে আগ্রহী। এই প্রকল্পে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আগ্রহ রয়েছে বলেও জানা গেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম আমলে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে ট্রাম্পের শেষ বৈঠক হয়েছিল। দীর্ঘ ছয় বছর পর পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ট্রাম্পের এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। এই সপ্তাহে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে গাজায় ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতে ট্রাম্প যে আটটি ইসলামিক দেশের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, শেহবাজ শরিফ তাদের মধ্যে একজন ছিলেন।