করুণ নায়ারের কেরিয়ারে কি ‘দাঁড়ি’! ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সুযোগ না পেয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত পেলেন বিদর্ভ ক্রিকেটার, কী বললেন প্রধান নির্বাচক?

করুণ নায়ারের টেস্ট কেরিয়ারে কি কার্যত দাঁড়ি পড়ে গেল? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজের জন্য ভারতীয় দল ঘোষণার পর এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে ক্রিকেট মহলে। নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান অজিত আগরকরের সাম্প্রতিক মন্তব্য সেই আশঙ্কাই আরও জোরালো করেছে।

আকুতি মেনে ক্রিকেটের কুলীন ঘরানায় দ্বিতীয়বার সুযোগ এসেছিল তাঁর। কিন্তু ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর ট্রফিতে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের কারণে দল থেকে বাদ পড়লেন বিদর্ভের এই ক্রিকেটার। বিলেতের মাটিতে চার টেস্টে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল মাত্র ২০৫ রান, গড় পঁচিশের সামান্য বেশি। একটি মাত্র হাফসেঞ্চুরি এসেছিল ওভাল টেস্টে।

নায়ার প্রসঙ্গে কী বললেন আগরকর?
করুণ নায়ারকে দল থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে স্পষ্টভাষী ছিলেন প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর। তিনি বলেন, “আমরা ইংল্যান্ডে করুণ নায়ারের থেকে অনেক বেশি প্রত্যাশা করেছিলাম। একটা মাত্র ইনিংসে সেই প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার নয়।”

আগরকরের গলায় হতাশা এবং দেবদূত পারিক্কলের প্রতি আস্থা— দু’টোই ছিল স্পষ্ট। তাঁর মন্তব্যেই স্পষ্ট যে, দ্বিতীয় সুযোগটি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন নায়ার। আগরকর আরও বলেন, “আমরা প্রত্যেককে কমপক্ষে ১৫-২০টা ম্যাচে সুযোগ দিতে চাই, কিন্তু সবসময় সেটা সম্ভব নয়।”

বিকল্প হিসেবে দেবদূত পারিক্কল
নায়ারের পরিবর্তে টেস্ট স্কোয়াডে কর্ণাটকের ব্যাটার দেবদূত পারিক্কলকে কেন বেছে নেওয়া হলো, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন আগরকর। তিনি বলেন, “বিকল্প হিসেবে দেবদূত পারিক্কল এই মুহূর্তে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য আমাদের কাছে।”

২৫ বছর বয়সী পারিক্কল সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া-এ’র বিরুদ্ধে প্রথম আনঅফিসিয়াল টেস্টে ১৫০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন। পারিক্কলের প্রশংসা করে আগরকর আরও বলেন, “ও অস্ট্রেলিয়ায় টেস্টে স্কোয়াডে ছিল। ধরমশালায় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হাফসেঞ্চুরি করেছিল। স্বল্প সুযোগে ব্যাট হাতে নিজেকে প্রমাণ করেছে সে। আর সত্যি বলতে ইংল্যান্ড সফরে করুণের থেকে আমরা অনেক বেশি কিছু চেয়েছিলাম।”

রেকর্ড-ব্রেকিং মরশুমও কাজে এলো না
২০২৪-২৫ ঘরোয়া ক্রিকেটে নায়ারের মরশুম ছিল রেকর্ড-ব্রেকিং। বিজয় হাজারে ট্রফির একটি সংস্করণে সর্বাধিক (৭৭৯) রান এবং রঞ্জি ট্রফির একটি মরশুমে আটশোরও বেশি (৮৬৩) রান করে টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আট বছর পর ভারতের হয়ে টেস্ট প্রত্যাবর্তন তাঁর সুখের হয়নি।

বীরেন্দ্র সেহওয়াগের পর ত্রিশতরান করা দ্বিতীয় ভারতীয় ক্রিকেটার হওয়া সত্ত্বেও, ইংল্যান্ড সফরে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স করতে না পারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দলঘোষণায় তাঁর না থাকা যেন দেওয়াল লিখনটা স্পষ্ট করে দিল।