“ভারতে ঢুকেছে চিনের ভয়ানক HMPV ভাইরাস”-শিশুদের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণ

২০২৫ সালের শুরু থেকে ভারতজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (HMPV)। চিন থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসটি বিশেষ করে ছোট শিশুদের মধ্যে দ্রুত সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ১ থেকে ২ বছরের শিশুদের মধ্যে এই সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি।

‘দ্য ল্যানসেট রিজিওনাল হেলথ, সাউথ ইস্ট এশিয়া’-র এক গবেষণায় বলা হয়েছে, HMPV-তে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে গুরুতর শ্বাসকষ্ট এবং ফ্লু-জাতীয় লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। জ্বর এবং কাশি হলো এর সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ।

তবে স্বস্তির খবর হলো, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) এবং তামিলনাড়ু সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের গবেষকরা জানিয়েছেন, এই ভাইরাসের মধ্যে সম্প্রতি কোনো নতুন পরিবর্তন দেখা যায়নি। ফলে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ HMPV-এর কোনো নতুন রূপ নয় বলে মনে করা হচ্ছে।

কোথা থেকে এল এই ভাইরাস?
গবেষণা অনুযায়ী, এই প্রাদুর্ভাবের সূত্রপাত ২০২৪ সালের শেষের দিকে চিনে একটি মৌসুমী সংক্রমণের সঙ্গে যুক্ত। সে সময় চিনে শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতার ৬ শতাংশ এবং হাসপাতালে ভর্তির ৫ শতাংশের বেশি ঘটনার জন্য এই ভাইরাসই দায়ী ছিল। ভারতে ২০২৫ সালের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে গুজরাট ও পুদুচেরিতে প্রথম HMPV সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়ে।

তামিলনাড়ুর গবেষণা দল ২০১৯ থেকে ২০২৩ এবং ২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছে যে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালে ২০,০০০-এরও বেশি HMPV পরীক্ষায় ৩.২% পজিটিভ পাওয়া যায়। এরপর ২০২৪ সালে ১১,১০০-এরও বেশি পরীক্ষায় এই হার ছিল ৩.৩%।

বিশেষভাবে ১-২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। ২০১৯-২০২৩ সালে এই বয়সী শিশুদের মধ্যে ৪.৫% এবং ২০২৪ সালে ৪.৬% HMPV পজিটিভ পাওয়া গিয়েছিল। এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের সাধারণত ১১ দিন অসুস্থ থাকতে হয় এবং হাসপাতালে থাকার গড় সময় ৭ দিন।