‘ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের ভিত্তিতে বিদেশ নীতি হয় না!’ রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে ট্রাম্পের জরিমানার পর মোদিকে কটাক্ষ কংগ্রেসের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক কড়া পদক্ষেপের পর ভারত সরকারের বিদেশনীতি নিয়ে তীব্র আক্রমণ শুরু করেছে বিরোধী দল কংগ্রেস। বুধবার পটনায় কংগ্রেসের কার্যকরী কমিটির (CWC) বৈঠকে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী সরাসরি অভিযোগ করেন, মোদি সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণেই দেশের বিদেশনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।

ট্রাম্পের পদক্ষেপ: দ্বিমুখী সমস্যায় ভারত
রাহুল গান্ধী একাধিক বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন, যা ভারতের জাতীয় স্বার্থে বড় সমস্যা তৈরি করেছে:

১. রাশিয়া থেকে তেল কেনা: ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের উপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত জরিমানা আরোপ করেছে।
২. আমেরিকায় রফতানি: ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপানো হয়েছে, যার ফলে দেশের বহু ক্ষেত্র চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে।
৩. H-1B ভিসায় কড়াকড়ি: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন, বিদেশি কর্মীদের সংস্থায় নিয়োগ করলে বছরে এককালীন এক লক্ষ মার্কিন ডলার দিতে হবে। ২১ সেপ্টেম্বরের পরবর্তী নিয়োগের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য। এই নির্দেশিকার ফলে ভারতের তথ্য-প্রযুক্তি কর্মীদের বিদেশি সংস্থায় নিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

রাহুল ও খাড়গের কড়া আক্রমণ
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের ভিত্তিতে বিদেশ নীতি তৈরি হয় না।” কংগ্রেস নেতা জোর দেন যে প্রধানমন্ত্রীর এই সময় প্রেসিডেন্টকে মোক্ষম জবাব দেওয়া উচিত এবং ভারতের জাতীয় স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।

এর আগে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও একই সুরে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার জন্য আজ আন্তর্জাতিক স্তরে আমরা এত রকম সমস্যায় পড়েছি। প্রধানমন্ত্রী যাঁদের খুব উৎসাহের সঙ্গে ‘আমার বন্ধু’ বলে ডাকতেন, আজ তাঁরাই ভারতকে একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।”

রাষ্ট্রসঙ্ঘে ট্রাম্পের মন্তব্য ও ভারতের জবাব
গতকাল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় ভারতকে আক্রমণ করে বলেন, ভারত ও চিন রাশিয়াকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মদত জোগাচ্ছে এবং রাশিয়া থেকে তেল কিনে তাকে অর্থের জোগান দিচ্ছে।

যদিও ভারত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক চাপানোকে ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে। ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিশ্বের অন্য যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক দেশের মতো ভারতও তার জাতীয় স্বার্থ ও অর্থনৈতিক সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। তবে ট্রাম্পের একের পর এক কঠোর সিদ্ধান্ত ভারতের বিদেশনীতির সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

Editor001
  • Editor001