বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য আমেরিকার নতুন ভিসা নিয়ম, পড়াশোনায় কী প্রভাব পড়বে?

বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়, উদ্ভাবন এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে আমেরিকা বরাবরই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী এফ-১ ভিসায় সেখানে পড়াশোনা করতে যান। কিন্তু এখন নতুন একটি নিয়ম তাদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তন শুধু শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও গবেষণাকেই প্রভাবিত করবে না, বরং বিশ্বজুড়ে প্রতিভার কেন্দ্র হিসেবে আমেরিকার ভাবমূর্তিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন এফ-১ ভিসা শুধুমাত্র ৪ বছরের জন্য বৈধ থাকবে। এতদিন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা যতদিন তাদের পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণ চলতো, ততদিনই আমেরিকায় থাকতে পারতেন। কিন্তু নতুন নিয়মের ফলে, যদি কোনো শিক্ষার্থীর পিএইচডি-র মতো দীর্ঘ কোর্স থাকে অথবা যদি তারা অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং (ওপিটি) করতে চান, তাহলে তাদের ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস) থেকে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে হবে।

এই নিয়ম পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আমেরিকার অর্থনীতিতেও বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। বিদেশি শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ আমেরিকান অর্থনীতিতে যোগ করে থাকেন। তাদের উচ্চ টিউশন ফি বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল বাড়াতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি, বেশিরভাগ বিদেশি শিক্ষার্থী স্টেম (STEM) অর্থাৎ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে পড়াশোনা করেন, যা আমেরিকার উদ্ভাবন ও কর্মশক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তবে, ইউএসসিআইএস-এর কাছে ইতিমধ্যেই প্রায় ৩৮ লক্ষ মামলার জট রয়েছে। এমতাবস্থায় হাজার হাজার নতুন ভিসা আবেদন যুক্ত হলে তা প্রক্রিয়াকে আরও বিলম্বিত করবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের ভিসা স্ট্যাটাস ঝুঁকির মুখে পড়বে এবং সময়মতো মেয়াদ না বাড়লে তাদের বহিষ্কার হওয়ারও ঝুঁকি থাকবে। অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে নিজেদের ভিসা নীতি সহজ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি আমেরিকা তার নীতি কঠোর করে, তাহলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এই দেশগুলোর দিকে আকৃষ্ট হতে পারেন, যা আমেরিকার বৈশ্বিক অবস্থানকে দুর্বল করবে।