কেন বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বাসি ভাত খাওয়া হয়? রান্না পুজোর নেপথ্যে লুকিয়ে থাকা আসল কারণ জেনেনিন

কথায় আছে, ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’, আর এই পার্বণের অন্যতম হলো রান্না পুজো। ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতে পালিত হয় এই উৎসব। বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন এই পুজোয় রাতভর রান্না চলে, আর পরের দিন সেই বাসি রান্না পরিবারের সকলে মিলে খাওয়া হয়। মূলত গৃহদেবতা ও দেবী মনসার উদ্দেশ্যে এই বিশেষ রান্না উৎসর্গ করা হয়।
রান্না পুজোর নিয়মকানুন ও মাহাত্ম্য
এই পুজোর প্রধান উদ্দেশ্য হলো মৌসুমের সেরা সবজি ও মাছ দেবতাকে নিবেদন করা। ভাদ্র সংক্রান্তির দিনে বাড়ির মহিলারা দেবী মনসার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের পদ রান্না করেন। একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে এই পুজো সম্পন্ন হয়। সাধারণত, রান্না পুজোর দিন রাতে গৃহদেবতার পূজা সেরে রান্না বসানো হয়। সারারাত ধরে বাড়ির মহিলারা কুটে-বেটে রান্না করেন। এই সময় রান্নাঘরে যেন সূর্যের আলো প্রবেশ না করে, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়। পরের দিন সূর্যোদয়ের আগেই সব রান্না শেষ করতে হয় এবং মা মনসাকে নিবেদন করার পরেই সেই খাবার খাওয়া শুরু করা হয়।
কী কী পদ রান্না হয়?
রান্না পুজোয় বিভিন্ন ধরনের পদ রান্নার রীতি রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আলু, কলা, পটল, নারকেল এবং বেগুনের নানা রকম ভাজা, ভাত, ছোলার ডাল, পুঁইশাক, মাছ ভাজা, কচুর শাক, চালতার টক ইত্যাদি। এই পুজোর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো ইলিশ মাছ। ইলিশ ভাজা, ইলিশ ভাপা, বা ইলিশের ঝাল— নানা পদে এই মাছ রান্না করা হয়। এটি শুধু একটি উৎসব নয়, এটি বাঙালির খাদ্য সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের একটি অংশ, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পালিত হয়ে আসছে।