পরকীয়া এখন নতুন ব্যবসা! ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে গোপন সম্পর্ক পাতছে লক্ষ লক্ষ ভারতীয়, কী নাম? কাদের জন্য ফ্রি?

যে পরকীয়া এতদিন পারিবারিক সম্পর্কে ভাঙন ধরাতো, আধুনিক প্রযুক্তির হাত ধরে সেটাই এখন নতুন এক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে ‘গ্লিডেন’ নামক একটি বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরির অ্যাপের কথা উঠে এসেছে, যা নিয়ে নেটদুনিয়ায় ব্যাপক আলোচনা চলছে।
ভিডিওতে এক ব্যক্তি এই অ্যাপের কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানান, এটি মূলত নারীদের কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। এখানে নারীরা বিনামূল্যে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারলেও, পুরুষদের জন্য রয়েছে একাধিক বিধিনিষেধ এবং মোটা অঙ্কের খরচ।
কীভাবে কাজ করে ‘গ্লিডেন’?
ভিডিওতে বলা হয়েছে যে, মহিলারা এই অ্যাপে “সম্পূর্ণ গোপন সম্পর্কের জন্য” বিনামূল্যে সাইন আপ করতে পারেন। কিন্তু পুরুষদের সামান্য সুবিধা পেতেও ন্যূনতম ১,৮০০ টাকা খরচ করতে হয়। এমনকি, মেসেজ পড়া বা ভার্চুয়াল উপহার পাঠানোর মতো প্রতিটি কাজের জন্যই পুরুষদের আলাদা করে টাকা দিতে হয়।
গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য এই অ্যাপটি একটি বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে। ব্যবহারকারীদের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টে লেনদেনটি ‘গ্লিডেন’ নামে না এসে ‘গুগল জিডি মিডিয়া’ নামে দেখায়, যাতে ব্যবহারকারীরা ধরা না পড়ে। এছাড়াও, অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়াতে এতে একটি ‘কুইক-এক্সিট’ বাটনও রয়েছে।
ভিডিওতে অ্যাপটিকে ‘একেবারেই অপ্রয়োজনীয়’ বলা হলেও বাস্তবে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৩০ লক্ষ ভারতীয় এই প্ল্যাটফর্মের সদস্য। এক বছরের মধ্যে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অ্যাপটির সদস্যদের মধ্যে মহিলাদের হার এখন ৫৮%।
মেট্রো শহরগুলি এগিয়ে: ব্যবহারকারীর সংখ্যার নিরিখে মেট্রো শহরগুলিই শীর্ষে রয়েছে। বেঙ্গালুরুতে ২০%, মুম্বাইতে ১৯%, কলকাতায় ১৮% এবং দিল্লিতে ১৫% ব্যবহারকারী রয়েছেন।
ছোট শহরেও পরকীয়া: শুধু বড় শহর নয়, এই প্রবণতা ছোট শহরেও ছড়িয়ে পড়ছে। বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য বিখ্যাত ‘অ্যাশলি ম্যাডিসন’ অ্যাপের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে তাদের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। তামিলনাড়ুর কাঞ্চীপুরম শহরে সাইন-আপের হার দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ, যা দিল্লি ও মুম্বাইয়ের মতো বড় শহরকেও ছাপিয়ে গেছে।
এই ধরনের অ্যাপের উত্থান থেকে বোঝা যায়, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের প্রবণতা এখন আর শুধু বড় শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজের সব স্তরেই তা ছড়িয়ে পড়ছে।