ভয়ংকর নেপাল, ‘জেন জি’ বিপ্লবে ক্ষমতা হারালেন প্রধানমন্ত্রী, ভারত সীমান্তেও বড় আশঙ্কার কালো মেঘ

ডিজিটাল বিপ্লব এবং গণবিক্ষোভের মুখে প্রবল চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা ছাড়লেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। সম্প্রতি সেদেশে ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নেপালের তরুণ প্রজন্ম অর্থাৎ ‘জেন জি’ (Gen Z)-এর তীব্র বিক্ষোভের মুখে এই রাজনৈতিক পট পরিবর্তন। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে, জনরোষের মুখে পড়ে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ওলি।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৪ সেপ্টেম্বর, যখন নেপাল সরকার ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে নিষিদ্ধ করে। সরকারের অভিযোগ ছিল, এই সংস্থাগুলি দেশে আইনত নথিভুক্ত নয় এবং বারবার নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও তারা নিয়ম মানেনি। এই সিদ্ধান্তের পরই প্রতিবাদে ফেটে পড়ে নেপালের তরুণ সমাজ। গত সোমবার হাজার হাজার মানুষ কাঠমান্ডুর রাজপথে নেমে আসে এবং প্রতিবাদ একসময় সহিংস রূপ ধারণ করে। মঙ্গলবার সেই বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়, যার ফলে সরকার কার্যত অচল হয়ে পড়ে। জনরোষের মুখে প্রধানমন্ত্রী ওলিকে পদত্যাগ করতে হয়।
এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। বুধবার সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের সমস্যার পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণ তো আছেই, কিন্তু বহিরাগত শক্তির ইন্ধনও রয়েছে।’ তাঁর মতে, গত ৫-৭ বছরে ভারতের একাধিক প্রতিবেশী দেশে একই ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা গেছে, যার ফলে সেই দেশগুলি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, ‘এই অস্থিরতার প্রভাব ভারতেও পড়তে পারে।’ তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, নেপালের পরিস্থিতি খারাপ হলে সীমান্ত পেরিয়ে মানুষ ভারতে প্রবেশ করতে পারে, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তিনি দ্রুত নেপালে শান্তি ফিরে আসুক এমনটাই আশা প্রকাশ করেন।
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল যে, বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণ কেবল একটি প্রযুক্তিগত বিষয় নয়, এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।