হরিশ্চন্দ্রপুরে তৃণমূল বনাম তৃণমূল! পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, কাঠগড়ায় খোদ মন্ত্রীর ভাই

ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তাল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর। সম্প্রতি তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ও অন্যান্য নেতাদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তির রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেনের ভাই ও তার অনুগামীদের দিকে। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূলেরই একাংশ, যা শাসকদলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে।

তৃণমূলের ব্লক স্তরে রদবদলের পর থেকেই উত্তেজনা ছড়াতে থাকে। সূত্রের খবর, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ (এ) ব্লক তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকে বুলবুল খান ঘনিষ্ঠ জিয়াউর রহমানকে সরিয়ে মন্ত্রীর অনুগামী মোশারফ হোসেনকে বসানো হয়েছে। যুব তৃণমূলের সভাপতি পদও পেয়েছেন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বিজয় দাস। এই রদবদলকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ চরমে ওঠে।

অভিযোগ উঠেছে, মঙ্গলবার রাতে মন্ত্রীর অনুগামীরা বিরোধী শিবিরের পঞ্চায়েত সদস্য ও অন্যান্য নেতাদের বাড়িতে এবং দোকানে হামলা চালায়, গাড়ি ভাঙচুর করে। এক পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীকে পিটিয়ে মারারও চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ, যদিও তিনি কোনোমতে পালিয়ে বাঁচেন।

আক্রান্তরা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাদের দাবি, মন্ত্রীর ভাইয়ের নির্দেশেই এই হামলা হয়েছে। হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে তৃণমূলের অপরপক্ষ রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়।

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা স্বপন আলি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের নেতার বাড়ি-গাড়ি ভেঙেছে। অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। যতক্ষণ না গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, আমরা অবরোধ চালিয়ে যাব।”

এ বিষয়ে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন শুধু জানিয়েছেন যে, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন, যা তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে।

হরিশ্চন্দ্রপুরের এই ঘটনা নিয়ে বিজেপিও শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপির জেলা সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মন্ত্রীর ভাই ক্ষমতা দেখাতে গিয়েই এই গণ্ডগোল করেছে। ওদের নিজেদের মধ্যেই মারামারি করে শেষ হয়ে যাবে।” এই ঘটনায় ফের একবার রাজ্য-রাজনীতিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চিত্রটি সামনে চলে এসেছে।