ফুল তুলতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি! বাড়ির কাছেই মিলল রক্তাক্ত দেহ, খুনের অভিযোগে উত্তাল পূর্বস্থলী

ফুল তুলতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হলো এক প্রৌঢ়ের। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর নশরতপুর গ্রামে নিজের বাড়ির সামনেই রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বিমল কৃষ্ণ সাহা (৫৫) নামে ওই ব্যক্তির নিথর দেহ। পরিবারের দাবি, এটি কোনোভাবেই স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, তাঁকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে বুধবার ভোরবেলা। প্রতিদিনের মতো সকালে উঠে বিমলবাবু ফুল তুলছিলেন এবং বাড়ির সামনের আবর্জনা পরিষ্কার করছিলেন। কিন্তু সেই রুটিনই যে তাঁর জীবনের শেষ রুটিন হবে, তা কেউ ভাবতে পারেননি। কিছুক্ষণ পরই পরিবারের সদস্যরা দেখেন, তাঁর দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে।

রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে
দেহের অবস্থা দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু। মৃতদেহটি উলঙ্গ অবস্থায় ছিল এবং গামছাটি খোলা পড়ে ছিল। মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং দেহটি অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে পড়ে ছিল। এই সমস্ত লক্ষণ দেখে পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত যে এটি খুন।

মৃতের স্ত্রী সন্ধ্যা সাহা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমি শুধু চাই এই ঘটনার বিচার হোক।” মৃত বিমল সাহার পুত্রবধূ জয়শ্রী সাহা বলেন, “আমরা ওঁকে বাড়ির সামনে আবর্জনা পরিষ্কার করতে বারণ করতাম। দেখে মনে হচ্ছে না যে উনি পড়ে গিয়েছেন। কেউ যদি আমার শ্বশুরমশাইকে মেরে থাকে, তাহলে তার কঠোর শাস্তি চাই।”

পুলিশি তদন্ত শুরু
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে আসে নাদনঘাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। থানার আইসি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। পুলিশ এলাকা ঘিরে ফেলে এবং বিস্তারিত তল্লাশি শুরু করে। ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে এবং দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়দের মধ্যেও এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা বলছেন, “যদি সত্যি খুন হয়ে থাকে, তাহলে খুনিরা আমাদের এলাকাতেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা চাই পুলিশ এর সঠিক তদন্ত করুক।” পুলিশ জানিয়েছে, তারা সবদিক খতিয়ে দেখছে এবং দ্রুত রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে।