কৃত্রিম মানব ভ্রূণ তৈরি করলেন বিজ্ঞানীরা! এবার কি জন্ম নেবে ‘ডিজাইনার বেবি’?

মার্কিন গবেষকরা সম্প্রতি একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন। এবার স্টেম সেল ব্যবহার করে শুক্রাণু বা ডিম্বাণু ছাড়াই সফলভাবে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম মানব ভ্রূণ। যদিও এটি বিজ্ঞানের একটি বিশাল অগ্রগতি হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে, তবে একইসঙ্গে এই উদ্ভাবন আইনি এবং নীতিগত বিভিন্ন বিতর্ক ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

আবিষ্কারের বিশেষত্ব
কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি এবং ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক ম্যাগডালেনা জারনিকা-গোয়েটজ এই কৃত্রিম ভ্রূণ তৈরির ঘোষণা করেছেন। এই ভ্রূণে হৃৎপিণ্ড বা মস্তিষ্কের মতো অঙ্গ না থাকলেও, এতে প্লাসেন্টা, কুসুম থলি এবং ভ্রূণ গঠনে ব্যবহৃত কোষ রয়েছে। গবেষকরা আশা করছেন, এই মডেল ভ্রূণগুলো মানব বিকাশের ‘ব্ল্যাক বক্সে’ আলোকপাত করবে এবং গর্ভপাতের কারণ বুঝতে সাহায্য করবে।

ভবিষ্যতের জন্য বড় বিপদ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আবিষ্কারের সবচেয়ে বড় আশঙ্কার জায়গা হলো ‘ডিজাইনার বেবি’ উৎপাদনের সম্ভাবনা। অর্থাৎ, যাদের আর্থিক ক্ষমতা আছে, তারা অর্থ ব্যয় করে ‘সর্বগুণযুক্ত, নীরোগ, শক্তিশালী’ সন্তানের বাবা-মা হবে। ভবিষ্যতে এই ধরনের ‘ডিজাইনার’ সন্তানেরা কি স্বাভাবিক প্রজননে জন্ম নেওয়া শিশুদের থেকে আলাদা হয়ে সমাজে চালকের আসনে বসবে, সেই প্রশ্নই এখন সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।

‘মানব ভ্রূণ’ না ‘সিন্থেটিক ভ্রূণ’?
এই আবিষ্কার নিয়ে যেমন উচ্ছ্বাস আছে, তেমনই রয়েছে বিতর্ক। ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের গবেষণা পরিচালক জেমস ব্রিসকো একে ‘মানব ভ্রূণ’ বলতে নারাজ। তিনি বলছেন, মানব ভ্রূণের স্টেম সেল থেকে মডেল তৈরির জন্য দ্রুত প্রবিধান তৈরি করা প্রয়োজন। অন্যদিকে, অধ্যাপক জারনিকা-গোয়েটজ জোর দিয়ে বলেছেন, এগুলো ‘মানব ভ্রূণ’ নয়, বরং ‘সিন্থেটিক ভ্রূণ’ বা ‘ভ্রূণের মডেল’ মাত্র।