হাইকোর্টে লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে বিতর্ক! বিচারপতিরা কেন বারবার লাইভ বন্ধ করছেন?

আদালতে স্বচ্ছতা বাড়াতে এবং বিচারপ্রার্থীদের সুবিধার জন্য লোকসভা, রাজ্যসভার মতো সুপ্রিম কোর্টেও চালু হয়েছে শুনানির লাইভ সম্প্রচার। একই ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা দেশের সমস্ত হাইকোর্টেই। কিন্তু ঢাকঢোল পিটিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে এই ব্যবস্থা চালু হলেও বাস্তবে এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ বহু এজলাসে এখনও লাইভ সম্প্রচার হয় না। আবার কিছু কিছু এজলাসে বিচার চলাকালীনই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কলকাতা হাইকোর্টে লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কিছু এজলাসে সওয়াল-জবাব চলার পরে রায় লেখার সময়ে তা বন্ধ করা হয়। আবার কিছু জায়গায় বিচারপতি বা আইনজীবীদের কথোপকথনের মধ্যে তাল কাটলে বা অন্য কোনো কারণে মনে হলেই লাইভ সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। শুধুমাত্র কয়েকটি এজলাস ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রেই এমনটা হচ্ছে, যা বিচারপ্রার্থীদের জন্য সমস্যার কারণ।
লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে নানা মত রয়েছে। সম্প্রতি একটি মামলার শুনানি চলাকালীন এক সিনিয়র বিচারপতি বলেন, “বাধ্য হয়ে অনেক সময় লাইভ স্ট্রিমিং বন্ধ করতে হয়। না হলে ভিডিওর কিছু অংশ কেটে নিয়ে এমনভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা বিচার সম্পর্কে সমাজে ভুল ধারণা তৈরি করতে পারে।” অনেক বিচারপতির মতে, শুনানিতে অনেক অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন বা কথা উঠে আসে যা মামলার মূল বিষয় নয়, কিন্তু সে সব অংশই ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
আইনজীবীদের মধ্যে মতপার্থক্য
লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যেও মতপার্থক্য রয়েছে। একদল আইনজীবী মনে করেন, লাইভ হলে মক্কেলরা সরাসরি দেখতে পাবেন তাঁদের মামলার কী হলো এবং তাঁদের আইনজীবী কী বললেন। এতে পেশায় স্বচ্ছতা আসবে। কিন্তু অন্য একদল মনে করেন, পেশার গোপনীয়তা এভাবে জনসমক্ষে তুলে ধরা ঠিক নয়। তবে সবাই একমত যে, হাইকোর্টে একটি নির্দিষ্ট ও অভিন্ন নিয়ম থাকা উচিত। কারণ কোনো এজলাসে লাইভ হবে আবার কোনো এজলাসে হবে না, এতে বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়ছে।