হাইকোর্টে ‘শোকের’ নামে চলছে কী? পুজোর আগে ৬ কর্মদিবসের ৩ দিনই কাজ বন্ধ! ক্ষুব্ধ বিচারপতি

মাঝে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর কলকাতা হাইকোর্টে আবারও ফিরে এসেছে ‘শোকের’ নামে কাজকর্ম বন্ধের সংস্কৃতি। আইনজীবীদের সংগঠনের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই এই কর্মবিরতি। গত মাত্র ১১ দিনে এমনটা ঘটেছে তিনবার। এর মধ্যে শনি-রবি ও নবি দিবসের ছুটি ধরলে মোট ৬টি কর্মদিবসের মধ্যে অর্ধেক দিনই অচল ছিল হাইকোর্ট! এই পরিস্থিতি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মামলাকারীরা, এমনকি আইনজীবীদের একাংশও। বিরক্ত হাইকোর্টের বিচারপতিরা।

গত ২৯ আগস্ট, বর্ষীয়ান আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুরের মৃত্যুর খবরে কোর্টের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১ সেপ্টেম্বর একই কারণে দুপুর সোয়া ১টা থেকে কাজ বন্ধ থাকে। সবশেষ এই সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) প্রবীণ আইনজীবী জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে সকাল থেকেই কাজ বন্ধের নোটিস জারি করা হয়। এমন লাগাতার ছুটিতে চরম হতাশ অনেক বিচারপতি।

সোমবার এজলাসে মামলা ওঠার পরেও যখন আইনজীবীরা শুনানি করতে আপত্তি জানান, তখন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ হতাশ হয়ে বলেন, “সময় এসেছে, এখনই আপনারা সিদ্ধান্ত নিন। সকাল সাড়ে ১০টায় বা সোয়া ১টায় কাজকর্ম বন্ধ…এতে কার ক্ষতি?” তিনি আরও বলেন, “এখন গিয়ে চেম্বারে বসব। মামলার পাহাড় জমবে। তখন বাছাই করতে হবে কার মামলা জরুরি, কার নয়। তাতে আপনারাই সমস্যায় পড়বেন। দিনের পর দিন এটা চলতে পারে না।”

আদালতে উপস্থিত এক সিনিয়র আইনজীবী স্বীকার করেন, “অন্য রাজ্যে গেলে এই ছুটির প্রবণতায় আমাদের নিয়ে হাসাহাসি হয়। আমি মনে করি, মানুষকে শ্রদ্ধা জানাতে আরও বেশি কাজ করা উচিত।” আরেকজন সরকারি আইনজীবী বলেন, “সংগঠন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা ঠিক নয়।”

এই কর্মবিরতির ফলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সোমবারও যেমন বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ হওয়া এক অন্তঃসত্ত্বা পরিযায়ী শ্রমিকের মামলার শুনানি স্থগিত হয়ে যায়, যা তাঁর ঘরে ফেরার আবেদনকে অনিশ্চিত করে তুলল।