ড্রোন নয়, দেবদূত! কাঠুয়ার দুর্গম গ্রামে ত্রাণের ডালি নিয়ে পৌঁছল ভারতীয় সেনা, বাঁচল ১৬টি পরিবার

জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলার চিল্লা গ্রাম। উঝ নদীর তীরে অবস্থিত এই গ্রামটি দীর্ঘদিন ধরে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যার কারণে গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সেতুটি ভেঙে গেছে। ফলে প্রায় ২০ দিন ধরে আটকে পড়েছিলেন ১৬টি পরিবারের বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতিতে ত্রাতা হিসেবে এগিয়ে এল ভারতীয় সেনা, আর তাদের ভরসা হয়ে দাঁড়াল অত্যাধুনিক ড্রোন প্রযুক্তি।

বন্যার কারণে রাস্তা ও সেতু সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে এবং কাদা জমে যাওয়ায় প্রচলিত উপায়ে সেখানে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। এই খবর জানার পর জেলা প্রশাসনের অনুরোধে সেনার গুর্জ ডিভিশন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। তারা বুঝতে পারে, ঐতিহ্যবাহী উপায়ে এই গ্রামে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব নয়। তাই ড্রোন ব্যবহার করে আকাশপথে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

৭ সেপ্টেম্বর, শনিবার বিকেল থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। নদীর পশ্চিম পাড়ের প্লাল গ্রাম থেকে সেনাবাহিনী বিশেষ ড্রোনের সাহায্যে খাদ্যসামগ্রী পাঠানো শুরু করে। প্রথম দিন রাত পর্যন্ত ১৫০ কেজি চাল, ডাল, লবণ, চিনি, তেল এবং অন্যান্য জরুরি সামগ্রী পাঠানো হয়। পরদিন সকালে ফের অভিযান শুরু হয় এবং আরও ১৫০ কেজি সামগ্রী পৌঁছানো হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কেজি খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছানো হয় দুর্গত গ্রামে। দীর্ঘদিন পর ত্রাণসামগ্রী হাতে পেয়ে স্বস্তিতে গ্রামের মানুষ।

সেনা জানিয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় রাইজিং স্টার কর্পস ব্যাপক ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। জলবন্দি মানুষকে উদ্ধার করার পাশাপাশি গ্রামে গ্রামে খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন এবং ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট পুনর্গঠনের কাজেও সক্রিয় ভূমিকা রাখছে তারা। মাঠে একাধিক কলাম মোতায়েন রাখা হয়েছে, যাতে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কাঠুয়ায় ড্রোন এখন আর ভয়ের প্রতীক নয়, বরং জীবনের আশা এবং মানবিকতার প্রতীক।