আমেরিকার হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়নের মেগা চুক্তি, বিশ্ব বাণিজ্যে এবার নতুন সমীকরণ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) নিয়ে ভারত ১৩তম দফার আলোচনা শুরু করেছে, যা বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। বর্তমানে আমেরিকা যেখানে ভারতের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি দিচ্ছে, এবং ইইউ-কে একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করছে, সেখানে এই চুক্তি ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উভয় পক্ষই চাইছে এই বছরের শেষ নাগাদ চুক্তিটি চূড়ান্ত করতে।
সোমবার অর্থাৎ ৮ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে এই আলোচনা শুরু হয়েছে, যেখানে শুল্ক-বহির্ভূত বাধা, বাজার অ্যাক্সেস এবং সরকারি ক্রয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে। এই চুক্তি শুধু বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে না, বরং ভারত এবং ইইউ-এর মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ককেও আরও গভীর করবে।
চুক্তিতে কী কী থাকছে?
২০২৪-২৫ সালে ভারত ও ইইউ-এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পণ্য বাণিজ্য ছিল প্রায় ১৩৬.৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি ইইউ-কে ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার করে তুলেছে। এই চুক্তিতে উভয় পক্ষের কিছু সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। ভারত চাল, চিনি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের মতো কিছু পণ্যকে চুক্তি থেকে বাদ দিতে চাইছে, অন্যদিকে ইইউ চাইছে অটোমোবাইল ও অ্যালকোহলের মতো পণ্যে বাজারে প্রবেশাধিকার। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় চিংড়ির উপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপের পর ইইউ ভারতের সামুদ্রিক পণ্য রপ্তানি বাড়াতে চাইছে।
এখন পর্যন্ত কী অগ্রগতি হয়েছে?
এখনও পর্যন্ত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ২৩টি বিষয়ের মধ্যে ১১টিতে উভয় পক্ষ একমত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বৌদ্ধিক সম্পত্তি, শুল্ক, বাণিজ্য, ডিজিটাল বাণিজ্য এবং জালিয়াতির মতো বিষয়গুলি। উভয় পক্ষ আগামী বছরের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে চলা শীর্ষ সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই চুক্তি কেবল অর্থনৈতিক নয়, কৌশলগত দিক থেকেও ভারত এবং ইইউ-এর সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে। সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা এবং ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য ও প্রযুক্তি কাউন্সিল (TTC)-এর মতো ক্ষেত্রগুলিতেও দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।