বাংলার বাড়ি প্রকল্পে চাঞ্চল্য, টাকা পেয়েও ঘর তৈরি করেনি অনেকে, এবার যা করতে চলেছে সরকার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘বাংলার বাড়ি’-তে বড়সড় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের টাকা উপভোক্তাদের হাতে পৌঁছে যাওয়ার পরও অনেকেই বাড়ি তৈরির কাজই শুরু করেননি। এই পরিস্থিতিতে এবার কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন জেলা থেকে টাকা অন্য খাতে খরচ করার অভিযোগ ওঠায় পঞ্চায়েত দফতর জেলা প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার অনুদান বন্ধ হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ২০২৪ সালে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের সূচনা হয়েছিল। এর মূল লক্ষ্য ছিল গ্রামীণ এলাকার গৃহহীন মানুষদের বাড়ি তৈরি করতে আর্থিক সহায়তা দেওয়া। প্রতিটি উপভোক্তা পরিবারকে ১.২০ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

কেন এই কড়া পদক্ষেপ?
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রথম কিস্তির ৬০,০০০ টাকা এবং ২০২৫ সালের মে মাসে দ্বিতীয় কিস্তির বাকি টাকা উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রথম কিস্তি পাওয়ার পর ১২ মাসের মধ্যে বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করার কথা। কিন্তু একাধিক জেলায় দেখা গেছে, অনুদান পেয়েও অনেক উপভোক্তা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেননি, কেউ কেউ আবার সরকারি টাকা ব্যক্তিগত খরচে ব্যবহার করেছেন।

এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বাড়ি তৈরির শর্তেই উপভোক্তাদের টাকা দেওয়া হয়েছে। যারা সরকারি সুবিধা পেয়েও বাড়ি তৈরি করছেন না, তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ ফেরত নেওয়া হবে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, এক টাকাও যেন অপচয় না হয় এবং প্রকৃত গৃহহীনরাই এর সুবিধা পান।”

নবান্ন সূত্রে খবর, শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, আরও কয়েকটি জেলায় একই পরিস্থিতি দেখা গেছে। এই সমস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চলেছে প্রশাসন। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি উপভোক্তার বাড়ি তৈরির অগ্রগতির বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই কড়া পদক্ষেপের ফলে সরকারি টাকার নয়ছয় বন্ধ হবে এবং যোগ্য উপভোক্তারা তাঁদের স্বপ্নের বাড়ি তৈরি করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।