নেপালে আরও বাড়ছে বিক্ষোভ, PM ওলির বাসভবনে মোতায়েন সেনা, জরুরি বৈঠক

নেপালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারির জেরে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার সকালে রাজধানী কাঠমান্ডুর বানেশ্বর এলাকায় শুরু হওয়া ছাত্র-যুবদের বিক্ষোভ মুহূর্তেই সহিংস রূপ ধারণ করে, যা নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে গুলি চালাতে হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’-এর দাবি অনুযায়ী, এই সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২০০-র বেশি মানুষ।

সকাল থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ বিকেলে আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ক্ষুব্ধ জনতা ব্যারিকেড ভেঙে নেপালের সংসদ ভবনে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায় এবং ২ নম্বর গেটে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে শূন্যে গুলি চালায়, এরপর কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ও রবার বুলেট ব্যবহার করে। কিন্তু তাতেও বিক্ষোভকারীদের আটকানো যায়নি।

কারফিউ জারি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঠমান্ডুর জেলা প্রশাসন অফিস কারফিউ জারি করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দফতর ও রাস্তাঘাট রক্ষায় সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ কার্যকর থাকবে। তবে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীরা সেনাকে এগোতে বাধা দিচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার নেপাল সরকার ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্স (টুইটার), ইউটিউব-সহ মোট ২৬টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সরকারের দাবি, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই প্ল্যাটফর্মগুলি রেজিস্ট্রেশন না করায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তরুণ প্রজন্ম ও রাজনৈতিক দলগুলো এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছে, যা এখন এক চরম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সরকারের জন্য।

সরকারের প্রতিক্রিয়া ও চিকিৎসা ব্যবস্থা
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি বালুওয়াতারে উচ্চপর্যায়ের জরুরি নিরাপত্তা বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, ‘জাতিকে অবমূল্যায়ন করা কখনই সহ্য করা যাবে না।’ এদিকে, সংঘর্ষে আহতদের এভারেস্ট, সিভিল এবং অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মাইতিঘরে একটি জরুরি প্রাথমিক চিকিৎসা শিবিরও স্থাপন করা হয়েছে।