রাজ্যে ফের বালি মাফিয়ারদের বাড়বাড়ন্ত, প্রযুক্তির জালিয়াতিতে চলছে পাচার, ইডির অভিযানে ফাঁস চাঞ্চল্যকর তথ্য

রাজ্যে ফের সামনে এল বালি মাফিয়াদের ভয়ংকর দৌরাত্ম্য। সরকারি নিয়মকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তোলার কাজ চলছে, যা এখন প্রযুক্তিগত জালিয়াতির মাধ্যমে আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। সোমবার রাজ্যের ২২টি জায়গায় তল্লাশি অভিযানে নেমে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর আধিকারিকরা এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছেন।

একই নম্বরে একাধিক লরি, নকল কিউআর কোড
সূত্রের খবর, বালি পাচারের জন্য একটি সুপরিকল্পিত চক্র কাজ করছে। নিয়মানুসারে, নদী থেকে বালি তুলতে গেলে লরি মালিকদের নির্দিষ্ট নম্বর জমা দিতে হয়। কিন্তু তদন্তে উঠে এসেছে, প্রায় সব লরিতেই একই নম্বর ব্যবহার করা হচ্ছিল। ফলে বাইরে থেকে মনে হচ্ছিল অনুমোদিত লরিই বালি তুলছে, অথচ সেই এক নম্বর ব্যবহার করে একাধিক লরিতে অবাধে বালি পাচার চলছিল।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের অভিযোগ, এখানেই শেষ নয়। লরির অনুমতিপত্রে যে কিউআর কোড দেওয়া হয়, সেটিকেও জাল করা হচ্ছিল। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল নকল কিউআর কোড, যা দিয়ে অনায়াসে এড়ানো যাচ্ছিল পুলিশের নজরদারি।

প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের ভূমিকা
এই বড়সড় কারচুপি প্রশাসনের অগোচরে কীভাবে চলছিল, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। তদন্তে নেমে ইডির আধিকারিকরা জানতে পারেন, এই বিষয়ে একাধিক থানায় বহুবার অভিযোগও দায়ের হয়েছে। কিন্তু বারবারই কিছুদিনের জন্য এই কারবার বন্ধ থাকলেও, আবার যেই কে সেই। রমরমিয়ে চলতে থাকে বালি পাচার। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের ধারণা, এই চক্রের সঙ্গে প্রশাসনের একাংশের যোগসাজশ রয়েছে, যার ফলে স্থানীয় থানাগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

ইডির তদন্তে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি লরির কাগজপত্র ও নম্বর খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই এই চক্রের সঙ্গে জড়িত মূল মাথাদের নাম প্রকাশ্যে আসতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে ইডি সূত্রে।