আকাশে ভোটযুদ্ধ, বিহারের ভোটে হেলিকপ্টারের লাইন, ঘণ্টায় লক্ষ লক্ষ টাকা ভাড়া গুনছেন নেতারা

ভোট বড় বালাই! বিহারের বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই নেতাদের মধ্যে আকাশপথে প্রচারের প্রতিযোগিতা তুঙ্গে। নির্বাচন কমিশন এখনও দিনক্ষণ ঘোষণা না করলেও, হেলিকপ্টার বুকিং নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গেছে। এই বছর হেলিকপ্টার বুকিংয়ের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
কেন হেলিকপ্টার?
ভোট প্রচারের জন্য অল্প সময়ে একাধিক এলাকায় পৌঁছানো এবং ভিড় আকর্ষণ করাই নেতাদের মূল লক্ষ্য। তাই রাস্তার খারাপ অবস্থা এড়িয়ে আকাশপথকেই বেছে নিচ্ছেন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। ২০১৯ সালের তুলনায় এই বছর হেলিকপ্টার ভাড়াও কয়েক গুণ বেড়েছে, কিন্তু তাতেও রাশ টানছেন না কেউ।
কারা কত হেলিকপ্টার বুক করলেন?
এনডিএ-জেডি(ইউ) জোট: এই জোটের নেতারা অন্তত ১৪-১৫টি হেলিকপ্টার বুক করেছেন, যার মধ্যে শুধু বিজেপিরই ১২টি।
ইন্ডিয়া জোট: বিরোধী শিবিরও পিছিয়ে নেই। তারা ৫টি হেলিকপ্টার দিয়ে প্রচার শুরু করবে। এর মধ্যে কংগ্রেস ২টি এবং আরজেডি ২টি কপ্টার বুক করেছে।
আকাশের ভাড়া ও খরচ:
একটি সিঙ্গল ইঞ্জিন হেলিকপ্টারের প্রতি ঘণ্টার ভাড়া ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা। নির্বাচনের সময় এই ভাড়া ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। আর দুটি ইঞ্জিনের হেলিকপ্টারের ভাড়া ঘণ্টায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা, যা ভোটের সময় ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। প্রতিটি বুকিংয়ের সঙ্গে ১৮ শতাংশ জিএসটি দিতে হয়।
আঞ্চলিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া:
আরজেডি নেতা রাজেশ যাদব জানান, তাঁদের দল সবসময় সীমিত সম্পদ নিয়ে লড়েছে। তবে দ্রুত একাধিক জায়গায় পৌঁছানোর জন্য এবার হেলিকপ্টার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপি মুখপাত্র বিনোদ শর্মা বলেছেন, হেলিকপ্টার ব্যবহারে খুব অল্প সময়ে একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচার চালানো যায়, যা নেতাদের জন্য সুবিধাজনক।
বাংলায় কি এই প্রবণতা দেখা যায়?
বিহারের মতো বাংলায় এই প্রবণতা তেমন ব্যাপক নয়। সাধারণত, মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর মতো শীর্ষ নেতারা হেলিকপ্টারে প্রচার করেন। আঞ্চলিক নেতাদের মধ্যে এই চল খুব কমই দেখা যায়। তবে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মতো নেতারা বাংলায় একাধিকবার হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছেন।
সব মিলিয়ে, এবারের বিহারের নির্বাচন যে আকাশ থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা স্পষ্ট। কে কত বেশি হেলিকপ্টার ব্যবহার করে জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারেন, সেটাই এখন দেখার।