ময়নাতদন্তের আগে-পরে কেন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা? খেজুরি কাণ্ডে তদন্তকারী অফিসারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত

পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে দুই বিজেপি কর্মীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তদন্তকারী অফিসারের (IO) ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ আরও জোরালো হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের সঙ্গে তদন্তকারী অফিসারের একাধিক ফোনালাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শাব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এই ঘটনায় গভীর বিস্ময় প্রকাশ করেছে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার দু’টি ভিন্ন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। একটি রিপোর্টে আঘাতের চিহ্ন ছিল না, অথচ এসএসকেএম হাসপাতালের দ্বিতীয় রিপোর্টে শারীরিক আঘাতের প্রমাণ মেলে। এই কারণে আদালত প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক, তদন্তকারী আধিকারিক, থানার ওসি-সহ আরও অনেকের কল ডিটেইলস চেয়ে পাঠিয়েছিল।
সোমবার আদালতে জমা দেওয়া প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয় যে, ময়নাতদন্তের ঠিক আগে ও পরে তদন্তকারী অফিসার একাধিকবার চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এই তথ্য শুনে বিচারপতি বসাক সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, “তদন্তকারী অফিসারের ভূমিকা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। কেন তদন্তকারী আধিকারিক ফোন করবেন?”
সিআইডি আদালতে জানায় যে, তাদের দেওয়া কল লিস্টে কোনো সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। অ্যাডভোকেট জেনারেলও বলেন যে, চিকিৎসকের মতে, সেই সময় কোনো বিশেষ কারণে ফোন করা হয়নি।
এই যুক্তি শুনে আদালত আরও বিরক্ত হয়ে বলে, “যেখানে কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি, শুধু মুখের কথাতেই রাজ্য জানিয়ে দিচ্ছে… তাহলে কিসের ভিত্তিতে রাজ্য বলে দিচ্ছে যে সন্দেহজনক কিছু নেই?” রাজ্য আরও সময় চাইলে বিচারপতি বলেন, “আপনারাই বলুন কতদিন সময় লাগবে।” আদালত আবারও নির্দেশ দিয়েছে যে, তদন্ত সংশ্লিষ্ট সকলের কল ডিটেইলস-এর বিস্তারিত তথ্য আগামী সোমবারের মধ্যে জমা দিতে হবে। ফলে, আগামী সোমবার আবারও এই মামলার শুনানি হবে।