GST-কমলেও রাজস্ব ঘাটতি হবে না! কেন এমন দাবি করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা?

জিএসটি কাউন্সিল সম্প্রতি করের হার কমিয়ে চার স্তর থেকে দুই স্তরে নামিয়েছে— ৫% এবং ১৮%। এর ফলে ৪৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, সেই বিষয়ে আশাবাদী কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি জানিয়েছেন, করের হার কমার কারণে পণ্যের দাম কমবে, যার ফলে ক্রেতাদের কেনাকাটা বাড়বে এবং সেই বর্ধিত চাহিদা থেকে রাজস্বের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে। তাঁর মতে, এই পরিবর্তন জিডিপির গতিকে আরও বাড়িয়ে দেবে।

কেন জিএসটি কমার পরেও রাজস্ব ক্ষতি হবে না?

রাজকোষ ঘাটতির ওপর জিএসটি কমানোর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নির্মলা বলেন, “৪৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির অনুমান একটি নির্দিষ্ট বছরের হিসেব। কিন্তু ২২ সেপ্টেম্বর থেকে যখন নতুন জিএসটি হার কার্যকর হবে, তখন পরিস্থিতি বদলে যাবে। ভোগব্যয় বাড়লে সরকারের আয়ও বৃদ্ধি পাবে এবং এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে।” তিনি বিশ্বাস করেন যে, রাজকোষ ঘাটতি জিডিপির ৪.৪% থাকবে।

জিএসটি সংস্কার: সাধারণ মানুষের জন্য সুবিধা

গত সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের নেতৃত্বে জিএসটি কাউন্সিল পুরনো ৫%, ১২%, ১৮%, এবং ২৮% কর কাঠামো পরিবর্তন করে একটি নতুন দুই স্তরের কাঠামো তৈরি করেছে। নতুন এই নিয়ম আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে। এর ফলে প্রায় ৪০০ পণ্য সস্তা হবে, যার মধ্যে সাবান, শ্যাম্পু, এয়ার কন্ডিশনার, ট্র্যাক্টর এবং গাড়িও রয়েছে। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ও জীবন বিমার প্রিমিয়ামের ওপর কোনো কর থাকবে না।

  • ৫% কর: বেশিরভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য এবং মুদিখানার সামগ্রী। বৈদ্যুতিক গাড়ি এবং ছোট গাড়িও এই করের আওতায় এসেছে।
  • ১৮% কর: বাকি অন্যান্য ভোগ্যপণ্য।
  • করমুক্ত: পাউরুটি, দুধ এবং পনিরের মতো কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য করমুক্ত রাখা হয়েছে।
  • ৪০% কর: ‘সিন গুডস’ এবং বিলাসবহুল সামগ্রীর উপর ৪০% কর অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

নির্মলা সীতারামন এই পরিবর্তনকে ‘সাধারণ মানুষের সংস্কার’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ দেশের ১৪০ কোটি মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করবে এবং প্রতিটি পরিবার উপকৃত হবে। তাঁর মতে, সমাজের দরিদ্রতম মানুষটিও কোনো না কোনো জিএসটি-যুক্ত পণ্য কেনেন, তাই এই সংস্কার সবার জন্য কল্যাণকর হবে।

এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধির হার প্রত্যাশিত ৭.৮% ছাড়িয়ে যাওয়ায় এবং নতুন জিএসটি সংস্কারের ফলে ভোগব্যয় বৃদ্ধি পেলে চলতি অর্থবছরে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ৬.৩-৬.৮% ছাড়িয়ে যাবে বলেও তিনি মনে করেন।